উজানের ঢল ও টানা কয়েক দিনে বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি কমে যাওয়ায় ঘর-বাড়িতে ফিরতে শুরু করছে বানভাসি মানুষ। এদিকে পানি নেমে যাওয়ায় ধান খেত পঁচে যাওয়া ক্ষত চিহ্ন ভেসে উঠছে। দুশ্চিন্তায় আছেন হাজারো কৃষক। বন্যার কারণে লালমনিরহাট সদর উপজেলার ১১টি এবং আদিতমারী উপজেলার ৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
সোমবার সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমা ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। এর আগে গত রোববার সকালে তিস্তার পানি বিপদ সীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত রাত থেকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে। উপজেলার মানুষ ঘরবাড়িতে ফিরতে শুরু করলেও লালমনিরহাট সদর উপজেলা ও আদিতমারী উপজেলার কিছু বানভাসী মানুষ এখনো ঘরবাড়িতে ফিরতে পারেনি। বন্যায় রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। অপরদিকে গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বন্যার্ত এলাকায় গো-খাদ্য সংকর দেখা দিয়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্র মতে, তিন দিনের বন্যায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়েছে।
এদিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের রতিপুর নামক স্থানে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার রেললাইন পানিতে তলিয়ে গেছে। ঝুঁকি নিয়েই চলছে ট্রেন।
তিস্তা চরের গোল বানু বলেন, ৩ বিঘা জমির পাকা আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আগামীতে কি খাবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
গোবর্ধন চরের কৃষক আনোয়ার আলী জানান, আকস্মিক বন্যায় ৬ বিঘা জমির আমন ও আগাম শীতকালিন সবজি নষ্ট হয়ে গেছে । এখন চোভে মুখে অন্ধকার দেখছি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত মানুষদের ১৩ লক্ষ নগদ টাকা ও ৯০ মেট্রিক টন জিআর চাল বন্যার্ত মানুষের মাঝে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী উপ-প্রকৌশলী রাশেদীন ইসলাম বলেন, রাত থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। বর্তমানে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক রাকিব হাওলাদার বলেন, বন্যা মোকাবেলায় লালমনিরহাট জেলায় ১৩ লক্ষ টাকা ও ৯০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম