ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৮০ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
২০২১ সালের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাউতলী মোড়ে সংঘর্ষের সময় আশিক মিয়া (১৭) নিহত হয়। তার পিতা সাগর মিয়া গত সোমবার রাতে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। নিহত আশিক মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কলেজপাড়ার বাসিন্দা সাগর মিয়ার ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল আলম খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. মহসিন, তানজিল আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক হালিম শাহ লিল মিয়া, জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এম. সাইদুজ্জামান আরিফ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান আনসারী, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাকিল মিয়া, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি সামি আহমেদ নাবিল, সাধারণ সম্পাদক শেখ মঞ্জুরে মাওলা ফারানি, বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল খান, এবং বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুব হোসাইন প্রমুখ।
এজাহারে বাদী সাগর মিয়া অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ মোদি বিরোধী আন্দোলনের সময় জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল হয়, যার অংশ হিসেবে আশিক মিয়া মিছিলে যোগ দেন। ওই দিন বিকাল ৩টার দিকে শহরের কাউতলী মোড়ে সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নির্দেশে আসামিরা আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করেন। গুলিতে আশিকের বুকে আঘাত লাগে এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয় যে, ওই সময় হাসপাতাল থেকে কোনো স্লিপ দেওয়া হয়নি এবং ময়নাতদন্ত ছাড়াই আশিকের লাশ দাফন করা হয়। স্বৈরাচারী সরকারের দমন-পীড়নের ভয়ে তখন আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি মো. মোজাফফর হোসেন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল