শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ আছেন আরও দুজন। বন্যায় ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় প্লাবিত হয়েছে। সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সড়ক পথে উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
নিহতরা হলেন উপজেলার বাঘবেড় গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী অমিজা খাতুন (৪৫) ও নয়াবিল ইউনিয়নের আন্ধারুপাড়া গ্রামের ইদ্রিস মিয়া (৮০)। নিখোঁজ আছেন নন্নী ইউনিয়নের অভয়পুর গ্রামের বছির উদ্দীনের দুই ছেলে আবু হাতেম (৩০) ও আলমগীর (১৭) এবং বাতকুচি গ্রামের মৃত আবদুল হাকিমের স্ত্রী জহুরা খাতুন (৪৫)।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, গত (৩ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর বাঁধ উপচে ও পাড় ভেঙে প্রায় ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। এতে ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনায় পানি প্রবেশ করায় ব্যাপক দুর্ভোগে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। বন্যার পানিতে ফসলি জমি পানির নিচে ও পানির তীব্র স্রোতে পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় ব্যপক ক্ষতির মুখে কৃষক। গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের আন্ধারুপাড়া গ্রামে ডুবন্ত সড়ক পার হওয়ার সময় পানিতে ভেসে যান ইদ্রিস মিয়া (৮০)। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তাঁর লাশ পান স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ছাড়া বাঘবেড় গ্রামে অমিজা খাতুন (৪৫) নামের আরেক নারীর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়। সাথে থাকা শিশুকে পানিতে ভাসতে দেখে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন। অন্যদিকে বন্যার পানি থেকে রক্ষা পেতে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন জহুরা, আবু হাতেম ও আলমগীর।
শুক্রবার স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংগঠনের উদ্ধার কর্ম চালিয়ে আটকা পড়াদের আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। এ ছাড়াও আজ শনিবার দিনভর শেরপুর ও নালিতাবাড়ীর স্বেচ্ছা সেবী সংগঠন গুলো বন্যায় আটকে পড়াদেও মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম করেন। সরকারী ভাবে ১২ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা সহ ১৩ টি কমিটি কার্যক্রম করেন। সেই কমিটি ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম কওে আসছেন। শনিবার বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা,বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও র্যাব বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেন।
নালিতাবাড়ী গাজীরখামার হয়ে শেরপুর সড়ক এবং নকলা পানির নিচে সড়কটি থাকায় যোগাযোগ করতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। নালিতাবাড়ী তিনানী হয়ে শেরপুর সড়কটি রাণীগাঁও এলাকায় বিকেলের দিকে ভাঙন দেখা দেওয়ায় এই সড়কটিও এখন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
মৃত্যু ও নিখোজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নালিতাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ছানোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ঢলের পানিতে ডুবে বৃদ্ধ, নারীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া তিনজন নিখোঁজ আছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম