ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের পাঁচলিয়া বাজার থেকে মান্নানগর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার অংশ বেহালদশা হয়ে পড়েছে। এই সড়কের অন্তত অর্ধশতাধিক পয়েন্টে তৈরি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। অব্যাহত ভারী বর্ষণে এসব গর্ত সারাক্ষণই পানিতে পূর্ণ থাকে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। গর্তে পড়ে যানবাহনের যন্ত্রাংশ নষ্ট ও বিকল হচ্ছে। যানবাহনের ধীরগতির কারণে লেগে থাকছে যানজট। এক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে লাগছে তিন ঘণ্টা। এতে ভোগান্তি বাড়ছে যাত্রী ও চালকদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় পাঁচলিয়া বাজার পর থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্ত্বর হয়ে রাজশাহীগামী মহাসড়কের মান্নাননগর পর্যন্ত মহসড়াকের প্রায় অর্ধশতাধিক পয়েন্টে সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে। বেরিয়ে এসেছে ইট-সুরকি। ছোট-বড় গর্তের কারণে ধীর গতিতে চলতে হচ্ছে যানবাহনকে। এতে মহাসড়কের যানবাহন চলাচলে চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে গর্তের কারনে যানবাহনগুলোর হঠাৎ গতি কমিয়ে নেয়ায় যানযজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
বাসচালক রমজান আলী জানান, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাঁচলিয়া বাজার থেকে মান্নাননগর পর্যন্ত অংশে ব্যাপক খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। খানাখন্দের কারণে বাস চালাতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। প্রায় সময় মহাসড়কে যানজট লেগেই থাকে। খানাখন্দে ভরা সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় গাড়িতে প্রচুর ঝাঁকুনি হয়। এ নিয়ে যাত্রীরা খুব বিরক্ত হয়।
ট্রাক চালক নজরুল ইসলাম জানান, ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে গাড়ি চালাতে খুবই কষ্ট হয়। অনেক সময় ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। এক ঘণ্টার রাস্তা যেতে অনেক সময় তিন ঘণ্টা লাগছে। জ্বালানি খরচ বেশি হচ্ছে।
চালক আজাদ হোসেন জানান, মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপক খানাখন্দ। গাড়ি চালাতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। গাড়ির যন্ত্রপাতি বিকল হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বড় পরিবহনের চেয়ে ছোট যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে বেশি।
মোটরসাইকেলের চালক সোহেল রানা জানান, মহাসড়ক ধরে প্রতিদিন যাওয়া আসা করতে হয়। রাতে বাড়ি ফেরার পথে খুবই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। খানাখন্দে ভরা গর্তের ভেতর পানি জমে থাকার কারণে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। গতরাতেও একটি মোটরসাইকেল গর্তে পড়ে যাওয়ায় পিছনে বসা এক নারী ছিটকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে।
বাসযাত্রী রিপন হোসেন জানান, তিনি রাজশাহী ঢাকা যাচ্ছেন। মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ অংশের প্রায় পুরোটা সড়কই খানাখন্দ। যে পরিমাণ ঝাঁকি খেয়েছি, পেটের নাড়ি ভুঁড়ি সব নড়ে গেছে। খুবই কষ্ট হয়েছে আসতে। গাড়ি আসছে ধীরগতিতে। সময় লেগেছে অনেক বেশি।
কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, খানাখন্দের কারণে এই সড়ক দিয়ে মালামাল পরিবহনে তাদের বিপাকে পড়তে হয়। সহজে যানবাহন পাওয়া যায় না। পেলেও অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হয়। যানবাহনের চালকদের দাবি, ভাঙাচোরা রাস্তায় যাতায়াতে তাঁদের জ্বালানি খরচ কয়েক গুন বেড়ে যায়। ফলে আগের থেকে এখন ভাড়া কিছুটা বেশি রাখেন তারা। অনেক সময় গর্তে আটকা পড়ে নষ্ট হয় যানবাহন। তখন লোকসানে পড়তে হয় তাঁদের।
সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইমরান ফারহান সুমেল জানান, ভারী বর্ষণের কারণে বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টির হয়েছে। আমাদের বিভাগীয় গাড়ী ও মালামাল ও শ্রমিকদের ইতোমধ্যে খানাখন্দ মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। তখন আর কোন দুর্ভোগ হবে না।
বিডি প্রতিদিন/এএ