বন্যা পরবর্তী সময়ে নোয়াখালীতে তিন হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়তই বাড়ছে দুর্ঘটনা। আহত হচ্ছে শিশু থেকে বৃদ্ধ মানুষ। নোয়াখালী সদরের উদয় সাদুর হাট সড়ক, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সড়ক, নেওয়াজপুর সড়ক, শরিফপুর ইউনিয়ন সড়ক, খলিফার হাট ও চরমটুয়া সড়ক, সুবর্ণচরের থানারহাট সড়ক, চরওয়াপদা, চরক্লার্ক, মোহাম্মদপুর সড়ক ও বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কসহ তিন হাজার কিলোমিটার সড়ক বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়তই বাড়ছে দুর্ঘটনা, যানবাহন এবং মানুষের জনদুর্ভোগ।
জেলার সদর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ি ও সুবর্ণচরে তিন হাজার কিলোমিটার সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং যানবাহনে ঘটছে অহরহ দুর্ঘটনা, আহত হচ্ছেন অনেকে- এমন তথ্য জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ ছাড়া এখনো বিভিন্ন স্থানে শত শত পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে অবৈধভাবে দখলে থাকা খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার করা তাদের একমাত্র দাবি।
সুবর্ণচরের চরওয়াপদা ইউনিয়নের মো. কেরানী জানান, বন্যার পরে সড়কগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। কাঁচা রাস্তাগুলো সম্পূর্ণ পানিতে তলিয়ে গেছে।
সদরের ধর্মপুর ইউনিয়নের ভাটিরটেক গ্রামের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাফেজ মহিউদ্দিন জানান, গত তিন মাসে বন্যায় গ্রামীণ সড়কগুলো বিধ্বস্ত হয়েছে। সিএনজি, অটোরিকশা তো দূরের কথা, মোটরসাইকেলও চালাতে হিমশিম খাচ্ছে এবং দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে পথচারী ও যাত্রীরা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী আজহারুল ইসলাম জানান, বন্যায় এবার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় তিন হাজার গ্রামীণ সড়ক ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর তালিকা করা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় অফিসে তালিকা পাঠানো হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে অনেক রাস্তাঘাট। কিছু কিছু সড়কে জনসাধারণের চলাচলের জন্য খোয়া ও বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। একইভাবে নোয়াখালী চন্দ্রগঞ্জ সড়কসহ সড়ক বিভাগের সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছে। বাড়ছে দুর্ঘটনা। তবে সদরের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক। প্রতিদিন যানবাহন চলাচলে রোগীরা খুবই দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছেন এবং রিকশা থেকে ছিটকে পড়ে আহত হচ্ছেন শিশু ও নারীসহ অনেকে।
নোয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার বলেন, প্রায় দুইশ কিলোমিটার সড়কে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং সংস্কার কাজ চলছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই