একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। অন্যদিকে গাজায় চলছে ইসরায়েলের ভয়ংকর আগ্রাসন। তবে চুপ করে বসে নেই উত্তর কোরিয়াও। নিরবে একের পর এক শক্তিশালী যুদ্ধাস্ত্রের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন। তার অস্ত্রভান্ডারে কি ধরনের যুদ্ধাস্ত্র রয়েছে তা নিয়ে কৌতূহলের অন্ত নেই বিভিন্ন দেশের। কিম সব সময়ই তার হাতিয়ারের বাঙ্কার নিয়ে চূড়ান্ত গোপনীয়তা বজায় রাখেন। কিন্তু এবার সব ধরনের গোপনীয়তা ভেঙে প্রকাশ্যে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র ভান্ডারের ছবি।
শুক্রবার উত্তর কোরিয়া প্রথমবারের মতো পারমাণবিক সেন্ট্রিফিউজের ছবি প্রকাশ করেছে।
পারমাণবিক বোমার জন্য জ্বালানি উৎপাদন করে সেন্ট্রিফিউজ। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন দেশটির একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণকেন্দ্র পরিদর্শন করার পর সেন্ট্রিফিউজের ছবি প্রকাশ করা হলো।
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণকেন্দ্র পরিদর্শনকালে কিম তার দেশের পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার সমৃদ্ধ করার আহ্বান জানান। এ জন্য তিনি আরও বেশিসংখ্যক পারমাণবিক বোমার উপকরণ উৎপাদন করতে বলেন।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, কিম পারমাণবিক অস্ত্রবিষয়ক প্রতিষ্ঠান (নিউক্লিয়ার উইপনস ইনস্টিটিউট) পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া তিনি পারমাণবিক বোমার উপকরণ তৈরির একটি ঘাঁটি পরিদর্শন করেন।
প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো সেন্ট্রিফিউজের ছবি প্রকাশ করা হয়। ছবিতে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কার্যক্রমের অন্তরালের বিরল দৃশ্য উঠে আসে।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কার্যক্রমের ওপর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ধাতব সেন্ট্রিফিউজের লম্বা সারির মাঝ দিয়ে হাঁটছেন কিম। এই যন্ত্রগুলো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজে ব্যবহার করা হয়।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, উত্তর কোরিয়ার কাছে ৫০টির কাছাকাছি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। শুধু তাই নয়, শতাধিক পরমাণু অস্ত্র বানানোর জন্য রসদও রয়েছে তাদের হাতে। পরমাণু হাতিয়ারের পাশাপাশি ডুবোজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিয়েও কাজ করছে কিমের দেশ।
মাস দুয়েক আগেই আণবিক বোমা বহনে সক্ষম মিসাইলের পরীক্ষা করেছে পিয়ংইয়ং। যা সফলও হয়েছে। ওই একেকটি বোমার ওজন প্রায় ৪.৫ টন। যা বহুদূর পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম।
সমর বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়াকে চোখ রাঙিয়ে এই হাতিয়ার তৈরি করেছেন কিম। গত বছরের ডিসেম্বরে শত্রু দেশে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। তার সাফ বার্তা ছিল, প্রতিপক্ষ যদি পরমাণু অস্ত্রের আস্ফালন করে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে তাহলে আক্রমণ শানাতে পিছপা হবে না উত্তর কোরিয়া।
সূত্র : আল-জাজিরা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত