ভারতের একটি স্কুলে ‘উন্নতি’র আশায় কথিত ‘বলিদান’র নামে সাত বছর বয়সী এক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত তিন শিক্ষকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির পুলিশ।
ভারতের উত্তর প্রদেশের ঐতিহাসিক স্থাপনা তাজমহল থেকে দূরে হাতরাস শহরে একটি স্কুলের হোস্টেলে এ ঘটনা ঘটে। গত রোববার রাতে স্কুলের হোস্টেলের বিছানা থেকে ওই বালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলেছে, স্কুলের পরিচালক দীনেশ বাঘেল তার গাড়ির ট্রাংকে ওই বালকের মরদেহ লুকিয়ে রেখেছিলেন।
পুলিশ সূত্রে আনন্দবাজার পত্রিকার খবর, স্কুলের ‘উন্নতি’ না হওয়া নিয়ে বিচলিত ছিলেন বাঘেল। আর তার বাবা তন্ত্রসাধনা করেন। তার পরামর্শেই উন্নতির জন্য এক পড়ুয়াকে ‘বলি’ দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়। এরপর ‘নরবলি’র আয়োজন করা হয়। এজন্য বেছে নেওয়া হয় স্কুলের হোস্টেলের এক পড়ুয়াকে।
প্রথমে গত ৬ সেপ্টেম্বর ওই পড়ুয়াকে হোস্টেল থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে স্কুলেরই পেছনে একটি জায়গায় ‘বলি’র ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেই পড়ুয়া পালিয়ে যান বলে ওই তন্ত্রসাধনা ব্যর্থ হয়। এরপর আবার ২২ সেপ্টেম্বর এই ‘বলিদান’র আয়োজন করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা হিমাংশু মাথুর এএফপিকে বলেছেন, বালকটিকে বলিদানের জন্য মন্দিরের একটি বেদীতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে কিছু আনুষ্ঠিকতা শেষে তাকে বলিদান করা হতো। কিন্তু শিশুটি ভয়ে চিৎকার শুরু করায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিন শিক্ষক।
ঘটনায় জড়িত থাকায় বাঘেল এবং তার বাবা ও স্কুলের তিন শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান হিমাংশু।
কীভাবে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি মাথুর। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই বালকের মরদেহের ময়নাতদন্তের পরীক্ষা চলছে।
ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো অনুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে দেশে মানববলির ঘটনায় ১০৩টি মামলা হয়েছে।
এ ধরনের বলিদান সাধারণত দেবতাদের সন্তুষ্ট করার জন্য করা হয়। তন্ত্রসাধনা ও কুসংস্কার থেকে উপজাতীয় এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে বলিদানের ঘটনা বেশি ঘটে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল