গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আজ ৩০ আগস্ট ‘আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সাতশর অধিক মানুষকে গুম করা হয়েছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ‘গুম’ বা ‘নিখোঁজ’ ইস্যুতে বিদেশিদেরও আগ্রহ রয়েছে। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট বাংলাদেশ সফর করেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গুম বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ বিভিন্ন সময় গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের একটি তালিকা বাংলাদেশ সরকারকে হস্তান্তর করেন।
হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের পুত্র সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নির্বাহী পরিষদ সদস্য শহীদ মীর কাসেম আলীর পুত্র সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আরমান আহমদ বিন কাসেম দীর্ঘ ৮ বছর পর গুম অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। জামায়াত নেতা হাফেজ জাকির হোসাইন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আল মোকাদ্দাস ও মোহাম্মদ ওলিউল্লাহ এবং বিএনপি’র নেতা ইলিয়াস আলী ও সাবেক কমিশনার চৌধুরী আলমসহ বহু মানুষ এখনো গুম অবস্থায় আছেন।
তিনি আরও বলেন, গুম ও অপহরণকৃত ব্যক্তিদের পরিবার-পরিজন অত্যন্ত উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে জীবন-যাপন করছেন। গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাদের পরিবারের নিকট ফেরত দেওয়ার জন্য হাসিনা সরকারের নিকট বারবার আবেদন-নিবেদন করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুম হওয়া মানুষদের সন্ধানে ৫ সদস্যের একটি কমিশন গঠন করেছে। ‘কমিশন অব ইনকয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ অনুসারে তদন্তকাজ সম্পন্ন করে কমিশনকে আগামী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
জামায়াতের আমির আশা করছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুম হওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত খুঁজে বের করে তাদের পরিবার-পরিজনদের নিকট ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন এবং গুমের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক