বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, ‘তথ্য সন্ত্রাস ও হলুদ সাংবাদিকতা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে ম্লান করে দিচ্ছে। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা নিশ্চিত করতে হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে।’
আজ শনিবার সকালে খুলনা প্রেসক্লাবে বিএফইউজের সদ্য প্রয়াত সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন এই সভার আয়োজন করে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। হলুদ সাংবাদিকতার কারণে সাংবাদিকরা তাদের মর্যাদা হারাচ্ছেন। যারা ভালো সাংবাদিকতা করে মানুষ তাদের ওপর আস্থা রাখে, বিপদ আসলে পাশে দাঁড়ায়।’
মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সভাপতি মো. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ স্মরণ সভায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগর আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন হেলাল, বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন, রফিউল ইসলাম টুটুল, এইচ এম আলাউদ্দিন,যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আকরামুজ্জামান, সাংবাদিক নেতা রাশিদুল ইসলাম, শেখ দিদারুল আলম, এরশাদ আলী, জিয়াউস শাহদাত, ড্যাব সভাপতি ডা. মোস্তফা কামাল, অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ হোসেন বাচ্চু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আবুল হাসান হিমালয় ও আবদুর রাজ্জাক রানা।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন,বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার বড্ড দুর্দিন চলছে। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, সাংবাদিকতায় বস্তুনিষ্ঠতা এক অপরিহার্য বিষয় বলতে গেলে সাংবাদিকতার প্রান বলতে পারেন । বস্তুনিষ্ঠতা হচ্ছে আমরা কোন দল বা গোষ্ঠীর পক্ষপাতিত্ব না করা । সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলা। মোদ্দা কথা বিষয়টা বাড়িয়ে বা কমিয়ে না বলা বা লেখা । আসলে সাংবাদিকতা এমন এক পেশা যেখানে নিজের মন্তব্য লেখার কোন সুযোগ নেই । আপনি যা জানবেন উপযুক্ত প্রমান হাতে নিয়ে তা মানুষ কে জানাবেন । একজন সৎ , আদর্শবান সাংবাদিকের লক্ষন হল তিনি পক্ষপাতহীন লিখবেন । কিন্তু আমরা সেটা করছি বা করতে পারছি?
এটাও সত্য যে,আমাদের দেশের বাস্তবতায় একজন সাংবাদিক কখনোই বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করার সুযোগ পান না । যদিও বাংলাদেশের সংবিধানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার কথা বলা আছে তবুও আপনি স্বাধীন নন । যা সত্য তা আপনি লিখতেও পারেন না বলতেও পারেন না । এক জন সাংবাদিক কে বহু ঘাত পরিঘাত পেরিয়ে সাংবাদিকতায় মুনশিয়ানা দেখাতে হয়।
সভায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা ছাড়া গণতন্ত্র সুরক্ষা পাবে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, কর্মস্থলেও অধিকার বঞ্চিত হওয়ায় কিংবা নিরাপত্তা না থাকার কারণে সাংবাদিকরা স্বাধীন সাংবাদিকতা করতে পারেন না। তাই সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আইন করা জরুরি। সাংবাদিকতা একটি ঝুকিপূর্ণ পেশা। এখানে কাউকে জোর করে নিয়ে আসা যায় না বরং এই ঝুঁকি মেনে নিয়েই আমাদের সাংবাদিকতা করতে হয়।
সাংবাদিকদের পেশার মর্যাদার কথা তুলে ধরে মো. শহিদুল ইসলাম আরও বলেন, এই পেশায় যারা জড়িত তাদের দেশের স্বাধীনতা ও মূল্যবোধের কথা তুলে ধরতে হয়। মনে রাখতে হবে চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যম যদি দুর্বল হয় তাহলে রাষ্ট্রব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যাবে। সুতরাং দেশেকে সুদৃঢ় রাখতে হলে রাষ্ট্রের বাকি তিনটি স্তম্ভের পাশাপাশি চতুর্থ হিসেবে সংবাদপত্রকেও দায়িত্ব পালন করতে হয়।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ