প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনে দেশে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগও চোখে পড়ার মতো। তরুণরা এক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখছেন। তাদের নানা উদ্যোগ আর প্রচেষ্টাও প্রশংসনীয়। লালমনিরহাটে অবস্থানরত উদ্ভাবনের নেশায় উন্মুখ তেমনি একদল তরুণ এবার বাংলা ভাষায় নির্দেশনা গ্রহণ করতে সক্ষম এমন একটি ড্রোন উদ্ভাবন করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক এস এম ইশতিয়াক ইবনে সালামের নেতৃত্বে একদল তরুণের অবিরাম প্রচেষ্টার ফসল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন ‘আচার্য’ নামের ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বাংলায় কথা বলে (ভয়েস কমান্ডে)। উদ্ভাবকরা দাবি করেছেন, এটি বিশ্বের প্রথম ‘বাংলা কমান্ডে’ পরিচালিত ড্রোন। উদ্ভাবনকারী ওই দলের নাম ‘আরপাস টাস্কফোর্স (RPAS Taskforce)’।
আরপাস টাস্কফোর্স দলের সদস্যরা বলেন, ‘পথটা মসৃণ ছিল না। চাইলে আমরা বাজার থেকে একটি ড্রোন কিনে তা দিয়ে কাজ শুরু করতে পারতাম। কিন্তু আমাদের মাইন্ডসেট ভিন্ন ছিল তাই আমরা শূন্য থেকেই শুরু করি। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমাদের গবেষণা শুরু হয়। প্রতিটি ধাপ ছিল অনেক চ্যালেঞ্জিং। কখনো কখনো কাক্সিক্ষত লক্ষ্য পূরণ না হলেও আমরা হতাশ হয়ে যাইনি। তারই ফলশ্রুতিতে আমরা ২০২৪ সালের ২৮ মার্চ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করি অর্থাৎ আমাদের ড্রোন প্রকল্প সফলতার মুখ দেখে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় চালিত আমাদের ড্রোনের পাইলট সিস্টেমটির নাম হলো ‘আচার্য’। ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে বাংলা কণ্ঠস্বর শুনেই এটি পরিচালিত হয়। আর্টিফিশিয়াল নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এটিকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। আমাদের ‘আরপাস টাস্কফোর্স’ টিমের তৈরি এ পাইলট সিস্টেমটি যে কোনো ধরনের ড্রোনে ব্যবহারের জন্য উপযোগী। অন্য সাধারণ ড্রোনে এ সিস্টেমটি ইনস্টল করলে সেটিও বাংলা ভয়েস কমান্ডে চালানো যাবে।’ আরপাস টাস্কফোর্স দলের দলনেতা এস এম ইশতিয়াক ইবনে সালাম বলেন, ‘এ পর্যন্ত উদ্ভাবিত ড্রোনগুলোর কমান্ডিং ল্যাঙ্গুয়েজ হলো ইংরেজি। ‘আচার্যের’ ক্ষেত্রে শুধু বাংলায় কথা বলতে পারাই যথেষ্ট। এমনকি কথা বলতে শিখেছে এমন ছোট শিশুরাও চাইলে এটা ওড়াতে পারবে।’