ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইএসএ) ইউক্লিড মিশন ২০২৩ সালে যাত্রা শুরু করে এবং এর মাধ্যমে মহাবিশ্বের বৃহত্তম থ্রিডি মানচিত্র তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি মিশনটির প্রথম পর্যায়ের তথ্য উন্মোচন করা হয়েছে, যেখানে ১৪ মিলিয়ন গ্যালাক্সি এবং আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপথের লাখ লাখ নক্ষত্রের বিস্তারিত ছবি প্রকাশিত হয়েছে।
ইউক্লিড মিশনের মূল লক্ষ্য হলো, মহাবিশ্বের স্থান ও সময়ের একটি বিশদ থ্রিডি মানচিত্র তৈরি করা। এর মাধ্যমে অন্ধকার শক্তি ও অন্ধকার পদার্থের রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হবে। এই অদৃশ্য শক্তি ও পদার্থ মহাবিশ্বের ৯৫% গঠন করে।
প্রথম প্রকাশিত ডেটাটি একটি বিশাল ২০৮ গিগাপিক্সেল মোজাইক, যা চূড়ান্ত মানচিত্রের ১% অংশকে উপস্থাপন করে। চূড়ান্ত মানচিত্রটি ছয় বছরের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তৈরি করা হবে এবং আকাশের এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করবে। এতে ১০ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের গ্যালাক্সি পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের মুলার্ড স্পেস সায়েন্স ল্যাবের প্রফেসর ম্যাট পেজ ইউক্লিডের দৃশ্যমান যন্ত্রাংশের (VIS) ক্যামেরার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্লিডের আগে আমরা কখনো এত বড় আকাশের অঞ্চল এত উচ্চ রেজোলিউশনে পর্যবেক্ষণ করতে পারিনি।’
প্রকাশিত চিত্রগুলোতে আকাশের যে অংশটি মোজাইকের মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, সেটি এবং এর ভেতরের কিছু অবিশ্বাস্য দৃশ্য প্রদর্শিত হয়েছে। আলোচ্য চিত্রে নীল আলোর অংশগুলো আসলে গ্যালাক্টিক সার্কাস মেঘ, যা গ্যাস ও ধূলিকণায় তৈরি। এগুলো অপটিক্যাল আলো প্রতিফলিত করে এবং ইউক্লিডের সংবেদনশীল ক্যামেরা দ্বারা ধরা পড়েছে।
যখন মোজাইকটিতে আরও গভীরভাবে জুম করা হয়, তখন বিভিন্ন আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য দেখা যায়, যার মধ্যে রয়েছে সর্পিল গ্যালাক্সি NGC 2188 এবং গ্যালাক্সি ক্লাস্টার অ্যাবেল ৩৩৮১। এমনকি ৬০০ গুণ জুম করা একটি দৃশ্যে দূরবর্তী এক ঘূর্ণায়মান গ্যালাক্সির অসাধারণ বিস্তারিত চিত্রও দেখা যায়।
ইউক্লিড মিশনের মাধ্যমে অদূর ভবিষ্যতে মহাবিশ্বের অনেক অজানা রহস্য উন্মোচিত হবে বলে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল