বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ। মেটা মালিকানাধীন এই অ্যাপটি নিয়মিতই হ্যাকারদের টার্গেটে থাকে। ফলে সময় সময় প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতি ও প্রতারণার ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। তবে, এই সমস্যা মোকাবিলায় হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য ক্রমাগত নতুন নিয়ম চালু করছে। নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের জন্য রয়েছে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা।
সম্প্রতি, হোয়াটসঅ্যাপ ভারতে প্রায় ৮৪ লাখ অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছে। নিষিদ্ধ হওয়া এই অ্যাকাউন্টগুলোর বেশিরভাগই স্বয়ংক্রিয় মেসেজ বা স্প্যামিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিল। প্ল্যাটফর্মটি তাদের নিজস্ব সুরক্ষা প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ধরনের অপব্যবহার রোধে কাজ করে যাচ্ছে।
হোয়াটসঅ্যাপের সাম্প্রতিক ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু ২০২৪ সালের আগস্ট মাসেই ভারতে প্রায় ৮৪ লাখ ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে। এই ব্লক কার্যক্রমের মূল কারণ ছিল তথ্য প্রযুক্তি আইন ২০২১-এর ধারা ৪(১)(ডি) এবং ৩এ(৭) লঙ্ঘন। এসব অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ শনাক্ত করা হয়, যার মধ্যে স্প্যাম মেসেজ প্রেরণ ছিল অন্যতম।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৬ লাখেরও বেশি অ্যাকাউন্ট হোয়াটসঅ্যাপের স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যেখানে কোনও রিপোর্টের প্রয়োজন হয়নি। অর্থাৎ, হোয়াটসঅ্যাপের নিজস্ব নজরদারি ব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী যে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসব অবৈধ কার্যকলাপ নির্ধারণ ও ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
২০২৪ সালের আগস্ট মাসে হোয়াটসঅ্যাপে ব্যবহারকারীদের পক্ষ থেকে ১০,৭০৭টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৯৩টি অভিযোগের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ইন্ডিয়া গ্রিভান্স অফিসারের কাছে ই-মেইল এবং ডাকযোগে জমা পড়া বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতেও কিছু অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এই পদক্ষেপগুলো হোয়াটসঅ্যাপের সাইবার নিরাপত্তা এবং ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নেওয়া হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখে এবং নিয়মিতই বিভিন্ন অনৈতিক ও অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল