নীলফামারীতে বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। এতে আগ্রহ বাড়ছে অন্যদেরও। মসলা ও ভেষজ ওষুধ হিসেবে আদার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। বর্তমান বাজারে এর দামও বেশ চড়া। তাই পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে এবং বাড়তি আয়ের আশায় জেলার কৃষকরা বস্তায় আদা চাষ শুরু করেছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে বস্তায় আদা চাষ করেছেন কৃষক। নীলফামারী সদরে ১ লাখ ৫ হাজার, ডোমারে ৬৫ হাজার, ডিমলায় ৬০ হাজার, কিশোরগঞ্জে ৫৮ হাজার ৪০০, জলঢাকায় ২৬ হাজার ও সৈয়দপুর উপজেলায় ১৮ হাজার ১৫০ বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। এ ছয় উপজেলায় ৩ লাখ ৩২ হাজার ৫৫০ বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে।
নীলফামারী সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের কৃষক মান্না মিয়া বলেন, ‘এই প্রথম বস্তায় আদা চাষ করেছি। মাটির সঙ্গে গোবর সার, খইল, ছাইসহ রাসায়নিক সার মিশিয়ে ৯ হাজার বস্তায় চাষ করেছি। গত এপ্রিলের প্রথম দিকে আদার কন্দগুলো রোপণ করি বস্তার মাটিতে। বাড়ির পাশে পতিত জায়গা কাজে লাগিয়ে লাভের আশা করছি। এখনো কোনো রোগবালাই দেখা দেয়নি।’ কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের মিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘২০ শতাংশ পতিত জমিতে দেশি জাতের ১ হাজার ৩০ বস্তায় আদার চাষ করেছি। এখন আদার কেজি ৩০০ টাকা। উত্তোলনের সময় ২০০ টাকা কেজি বাজার পেলে লাভ হবে।’ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের কৃষক আবদুল কাদের বলেন, ‘মাঠের জমিতে আদা চাষ করা সম্ভব নয় বিধায় বাড়ির উঠানে ও আশপাশে ৩০ শতাংশ পতিত জমিতে ৬ হাজার ৭৩৫টি বস্তায় আদা চাষ করছি।’ নীলফামারী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আতিক হাসান বলেন, ‘এবার সদর উপজেলায় ১ লাখ ৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে বিনামূল্যে ১৫ হাজার বস্তা আদা সার ও কীটনাশক কৃষককে দেওয়া হয়েছে। কৃষককে নতুন এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বাড়ির আশপাশের ছায়াযুক্ত জায়গা, বাগান, পতিত স্থানে সহজেই এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করা যায়।’ নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এপ্রিল-মে আদা চাষের উপযুক্ত সময়। বস্তায় আদা চাষ করলে আলাদা জমির অপচয় হয় না। বস্তার মাটি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। আদার দাম অনেক বেশি। আমরা কৃষককে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি, কারিগরি সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।’
বিডি প্রতিদিন/এমআই