কৃষি নির্ভরশীল ব্যক্তিরা এবার আগাম শীতকালীন সবজি ভাল দামে বিক্রি করতে পেরে অধিক লাভবান হচ্ছেন। ইতিমধ্যে ফুলকপি, বেগুন, লালশাক, পালংশাক, ধনেপাতা, মুলাসহ বিভিন্ন সবজি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকরা খুশি। অসময়ের বৃষ্টিতে কিছু ক্ষতি হলেও সমস্যা হবে না বলে কৃষকরা জানান। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার আইড়মারা গ্রামের কৃষক মোঃ বশির আহমেদ বলেন, এবার তিনি বিশ বিঘা জমিতে ফুল কপি আবাদ করেছেন। একবিঘা ফুলকপি আবাদ করতে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়। বাজার ভাল থাকলে দুই লক্ষ টাকার উপরে বিক্রি হয়। তিনি আরোও জানান, তিনি তিন ধাপের কপি আবাদ করে থাকেন। প্রথম ধাপের কপি বৃষ্টিতে কিছু ক্ষতি হয়েছ। তবে এখন ভাল দাম পাচ্ছি, এতে ক্ষতি পুষিয়ে যাবে। শেষ ধাপের যে কপি বিক্রি হবে, এবার সেগুলিরও ভাল দাম হবে। বশির জানান, শাক সবজিকে কেন্দ্র করে কাঁচা মালের আড়ৎ হয়েছে। মাল বেচতে বেশি দূর যেতে হয়।
সুফিয়া বেগম (৬৬) বলেন, ছেলেরা কৃষি কাজ করে ভালই আছে। বাড়ির কাজে জমি ভরা কপি, বেগুন, কাঁচা মরিচ। না দেখলে ভাল লাগে না। প্রতিদিন সকালে বিকেলে নাতি নিয়ে ক্ষেতে আসি। নাতিও জোর করে নিয়ে আসে জমিতে। সবাই মিলে মিশে সবজি তুলে আড়তে পাঠাই। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার সবজি আবাদের লক্ষমাত্রা হলো ৯ হাজার ৩৮২ হেক্টর। আর ফুলকপির আবাদ হয়েছে ১ হাজার দুইশত হেক্টর জমিতে।
আদিল নামে এক কৃষক বলেন, মানিকগঞ্জের সবজির খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। আমাদের যে কোন সবজি আড়তে নেওয়ার সাথে সাথে বেপারীরা নিয়ে যায়। মাল নিয়ে বসে থাকতে হয় না। তিনি আরোও বলেন, এখানকার জমিও কখনো পতিত থাকে না। বারো মাসই কোন না কোন সবজি রোপণ করেন কৃষকরা। তবে এখন শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম। কিছুদিন পর চালকুমড়া, শিম, লাউ, দাড়া বাজারে আসবে। এবার সব সবজির ভাল দাম পাওয়ায় আমরা সবাই লাভবান হচ্ছি। কৃষি কাজে সন্তানদের সফলতায় মায়ের মুখেও হাসি ফুটেছে। তারাও ছেলেদের সাথে জমিতে কাজে সহযোগিতা করছেন। বাড়ির ছোট শিশুরাও কপি তুলতে জমিতে চলে এসেছে। এ যেন এক উৎসব। জেলা কৃষি
সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মুহাম্মদ মতিয়ার রহমান জানান, জেলায় এবার সবজি আবাদের লক্ষমাত্রা হলো ৯ হাজার ৩৮২ হেক্টর। এর মধ্যে ফুল কপির হচ্ছে ১ হাজার দুইশত হেক্টর জমিতে। প্রতিটি সবজির দাম ভাল এবং প্রচুর চাহিদা থাকায় জেলার কৃষকরা এবার বেশি লাভবান হচ্ছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ