চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে একই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণচেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় তারা।
ভুক্তভোগীর সহপাঠী মো. সাজিদ বলেন, আমরা চাই এই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হোক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করুক আমরা এটা চাই। ভবিষ্যতে যেন আমাদের বিভাগে এমন ঘটনা করার সাহস না পায়, তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। আমাদের সহপাঠীর সাথে যে আচরণ হয়েছে, এটার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ইশরাত বলেন, এমন অপরাধ আরও আগ থেকে হয়ে আসছে। কেউ সম্মানের ভয়ে সাহস করে কোনো অভিযোগ করেনি। আপু অভিযোগ করেছে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটা শাস্তির আয়োজন করবে তার নজির সারাজীবন থাকবে। যেন কেউ কোনোদিন এমন জঘন্য কাজ করতে না পারে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সজীব ঘোষ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন সেলে এই বিষয় তোলা হবে। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন আর কারও সাথে না ঘটে, সেই বিষয়ে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
ভুক্তভোগী জানান, থিসিস চলাকালীন আমার সুপারভাইজার কর্তৃক যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হই। থিসিস শুরুর পর থেকে তিনি আমার সঙ্গে বিভিন্ন যৌন হয়রানিমূলক; যেমন-জোর করে হাত চেপে ধরা, শরীরের বিভিন্ন অংশে অতর্কিত ও জোরপূর্বক স্পর্শ করা, অসংগত ও অনুপযুক্ত শব্দের ব্যবহার করেছেন। কেমিক্যাল আনাসহ আরও বিভিন্ন বাহানায় তিনি আমাকে তার রুমে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক জাপটে ধরতেন।
এ ঘটনায় চবি প্রশাসন যৌন হয়রানি বিরোধী সেলের প্রধান অধ্যাপক ড. জারিন আক্তারের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেলের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত এবং ভুক্তভোগী দুজনের সাথেই আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম শিকদার বলেন, গতকাল সাড়ে ১১টায় একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজকে যৌন নির্যাতন সেল কমিটির সভা আছে। শিক্ষার্থীদের বলবো ধৈর্য ধরতে। কেউ অন্যায় করলে ছাড় দেওয়া হবে না।
বিডি প্রতিদিন/এমআই
