২৯ মে, ২০২৪ ০৩:৩২

আবাসিক হলের আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হবে: ঢাবি উপাচার্য

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

আবাসিক হলের আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হবে: ঢাবি উপাচার্য

ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলো থেকে প্রতিদিন উৎপন্ন হওয়া নানা ধরনের ময়লা-আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড.এ এস এম মাকসুদ কামাল। মঙ্গলবার (২৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব  নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে "অষ্টম আর্বান ডায়লগ" এর অনুষ্ঠানে  উপাচার্য এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির এ যুগে ঢাবিতেও এ ধরনের কর্মকাণ্ড হওয়া উচিত। ঢাবির প্রতিটি হলের সামনে বিভিন্ন রঙের ডাস্টবিন রাখা হবে। ময়লার ধরনের ওপর ভিত্তি করে এসব ডাস্টবিনে বর্জ্য ফেলবেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে এসব বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হবে।  আপাতত এটিকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে নেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এ প্রজেক্ট বাস্তবায়নে সিটি করপোরেশন ও বিভিন্ন এনজিওর সহযোগিতা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার দিক থেকে এশীয়দের মধ্যে একেবারে তলানিতে বাংলাদেশের অবস্থান। দেশের সেরা বিদ্যাপীঠ ঢাবিতেই যে গবেষণা হয় তা অপ্রতুল। এতদিন বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা গবেষণামুখী ছিল না। এখন নতুন সিলেবাসে বিদ্যালয় থেকেই শিশুরা উদ্ভাবনী ক্ষমতার অংশীদার হতে পারবে।

তিনি আরও বলেন,উন্নত দেশগুলো আগে পরিকল্পনা গ্রহণ করে তারপর আরবান এলাকা গঠন করে। কিন্তু আমাদের দেশে আগে আরবান এলাকা তৈরি হয় পরবর্তীতে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। যদিও বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ মানুষ আরবান এলাকায় বসবাস করে। অপরিকল্পিতভাবে শহর গড়ে উঠায় সেখানে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে পারে না যা বড় রিস্কের তৈরি করে থাকে। তাছাড়া আমাদের সবুজায়ন কমে গেছে, নদী-খাল-বিলের পরিমাণও কমেছে। ফলে প্রতিনিয়ত শহরাঞ্চলের তাপমাত্রা বাড়ছে। বর্তমান সরকার ‘মাই ভিলেজ মাই টাউন’ সৃষ্টির পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। এর ফলে গ্রামাঞ্চলও শহরের মত সুযোগ সুবিধা থাকবে৷ ফলে মানুষ মাইগ্রেট কমিয়ে তার এলাকাতেই থাকতে পছন্দ করবে। তাছাড়া সরকার শহরের ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, খাল দখল এবং ডেল্টা প্লানের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে দেশের আরবান এলাকাগুলো পুনরায় বসবাসযোগ্য হয়ে উঠবে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন,আগামী বাজেটে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সঙ্গে ঢাবির সমন্বয়কল্পে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হবে। বরাদ্দের ওপর ভিত্তি করে ঢাবির নানা প্রকল্পে উত্তর সিটি করপোরেশন সমন্বয় করবে।ইতোমধ্যে ঢাকার আমিনবাজার ল্যান্ডফিল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ২০২৫ সাল থেকে এই এক ল্যান্ডফিলের মাধ্যমে সাড়ে ৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।

মেয়র বলেন, ঢাকা মহানগরী বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ নগরীর একটি। আমরা নানাভাবে এই মহানগরীর পরিবেশ দূষণ করছি। সুনাগরিক হিসেবে পরিবেশ সংরক্ষণে সকলকে সচেতন হতে হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।আমরা স্মার্ট সিটি কর্পোরেশন গড়তে ২৪ টি পার্ক উদ্ধার করেছি, ৫৪টি খাল দখলমুক্ত করেছি। আমাদের ট্যাক্স প্রদানে সমস্যা দূর করতে অনলাইনে করেছি। ট্রেড লাইসেন্স অনলাইনভিত্তিক করেছি। অনলাইনে অভিযোগ প্রদানের ব্যবস্থা করেছি।জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ক্লাইমেট একশন প্লান গ্রহণ করেছি। এডিস মশা দূর করার জন্য অভিযান চালাচ্ছি। ‘সবার ঢাকা এপস’ চালু করেছি যেখানে কেউ সমস্যার ছবি তুলে জানাতে পারবে। ফলে আমাদের লোকেরা সাথেসাথে সেখানে গিয়ে সমস্যা সমাধান করে আসবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স এন্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগ এবং ২০টি আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কনসোর্টিয়াম আরবান আইএনজিও ফোরামের যৌথ উদ্যোগে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পথে টেকসই নগরায়ন প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত হয় ডায়লগটি।এসময় হেবিট্যাট ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিরেক্টর জেমস্ স্যামুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন  ব্রাক এর  কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. লিয়াকত আলী, কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মানিষ কুমার আগ্রাওয়াল, গ্লোব ওয়ান এর কান্ট্রি ডিরেক্টর রায়হান মাহমুদ কাদেরী, গবেষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ ও প্রতিনিধিগণ।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর