গত বছরের ২৮ অক্টোবর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় লেজুড়বৃত্তি ছাত্র রাজনীতিসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়মিতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। এর প্রতিবাদে প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টাকে ‘শাড়ি-চুড়ি’ উপহার দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা ভঙ্গ করে এসব রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম চললেও প্রশাসন, বিশেষ করে প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় রবিবার বিকালে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে ব্যতিক্রমধর্মী এক কর্মসূচি পালন করেন। এই কর্মসূচিতে প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার দপ্তরে শাড়ি ও চুড়ি দিয়ে ‘নিন্দা’ জানানো হয়।
রবিবার বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন আবু সাঈদ চত্বরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখা ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণ ও কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৯ জুলাই বেরোবি শাখা ছাত্রশিবিরে কমিটিও প্রকাশ করা হয়। এর পরেই শিক্ষার্থীদের একটি অংশ এই কর্মসূচির ডাক দেয়।
শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন বলেন, জুলাই আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম সূতিকাগার। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর এই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি ছিল অনতিবিলম্বে ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ কার্যকর করা এবং লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিভিন্ন লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন ক্যাম্পাসে কমিটি দেওয়া থেকে শুরু করে সদস্য ফরম বিতরণ করছে। এর ফলে এই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা এই ক্যাম্পাসে আর দ্বিতীয় কোনো আবু সাঈদকে দেখতে চাই না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছেন এবং তাদের কর্মকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করছেন। এটি স্পষ্টতই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রণীত আইনের পরিপন্থী এবং প্রশাসনের আদেশ অবজ্ঞার সামিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধের আদেশে বলা হয়েছে, ক্যাম্পাসে সকল ধরনের লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ থাকবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল