সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার চাঞ্চল্যকর যতিন্দ্র হত্যাকাণ্ডের এক বছর দু’মাসেও খুনিদের শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কারা, কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা জানা জায়নি আজও। থানা পুুলিশ এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার কোন কূলকিনারা করতে না পারায় সম্প্রতি ঘটনাটি তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এদিকে দীর্ঘ দিনে খুুনিদের শনাক্ত করতে না পারায় ক্ষোভ হতাশ প্রকাশ করেছে যতিন্দ্রের পরিবার ও এলাকাবাসী।
গত বছরের ১২ মার্চ গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাসিয়া নদী থেকে, গলায় মাফলার পেঁচানো, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দলিল লেখক যতিন্দ্র কুমার দাস (৫৫)’র লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতদেহের সাথে প্লাস্টিকের মাটি ভর্তি দুটি বস্তাও বাঁধা ছিল। লাশ উদ্ধারের পর প্রাথমিক তদন্তে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে জানায় পুলিশ। যতিন্দ্র উপজেলার অলংকারি ইউনিয়নের টেংরা (দাশপাড়া) গ্রামের মৃত হরেন্দ্র কুমার দাস’ ছেলে। এর আগে গেল ৮ মার্চ রাতের খাবার শেষে মুঠোফোনে কল আসলে, কিছু টাকা নিয়ে ঘর থেকে বের হন তিনি। এরপর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এ ঘটনায় যতিন্দ্রের বড় ভাই রবিন্দ্র কুমার দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা (নাম্বার-১০, তাং-১২.০৩.২০২১ইং) দেন। এটি তদন্তের দায়িত্ব পান থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. নূর হোসেন। মামলা তার কাছেই তদন্তাধীন ছিল এক বছর দুই মাস ১১ দিন। দীর্ঘ সময়ে বিভিন্ন সূত্র ধরে রহস্য উদঘাটনে তিনি এগোলেও, তা আলোর মুখ দেখেনি আর। তবে ঘটনার পর সন্দেহভাজন হিসেবে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অগ্রগতি বলতে ওই পর্যন্তই। পরে থানা পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১৯ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এ মামলার তদন্তভার হস্তান্তর করা হয়।
থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. নূর হোসেন বলেন, অধিকতর তদন্তের জন্য যতিন্দ্র হত্যা মামলা, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়েছে।
যতিন্দ্রের বড় ভাই রবিন্দ্র কুমার দাস বলেন, এক বছর পার হয়ে গেছে। কী কারণে, কে বা কারা হত্যা করল জানতে পারলাম না। ভাইকে তো আর ফিরে পাব না। কেন হত্যা করা হয়েছে জানতে চাই।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও টেংরা গ্রামের বাসিন্দা সিতার মিয়া বলেন, যতিন্দ্র অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ ছিলেন। এক বছরে তার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে না পারা, থানা পুলিশের চরম ব্যর্থতার পরিচয়। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন না হওয়া পর্যন্ত এলাকাবাসীর আতঙ্ক কাটবে না। অজ্ঞাত খুনিদের শিকার হতে পারে আরও কেউ।
মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের এসআই লিটন চন্দ্র ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, ক’দিন আগে মামলার ডকেট (নথিপত্র) হাতে পেয়েছি। সম্ভাব্য সব বিষয় খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা