‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রোকের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরোলজি ওয়ার্ডে রোগী ভর্তির পরিসংখ্যান দেখলেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠে। মূলত আমাদের জীবনযাপনের পরিবর্তন এবং অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের কারণে স্ট্রোক বাড়ছে। স্ট্রোকের চিকিৎসা শতভাগ নিরাময়যোগ্য না হলেও নিয়মতান্ত্রিক চলাফেরা করে সুস্থ থাকা সম্ভব।’
মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) নিউরোলজি ও নিউরোসার্জারি বিভাগের উদ্যোগ এবং চমেক শিক্ষক সমিতির সহায়তায় নতুন একাডেমিক ভবনে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
‘প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের স্ট্রোক হতে পারে, সেই একজন যেন আপনি না হন’ শীর্ষক স্লোগানে দিবস উপলক্ষে সকাল ৮টায় আলোচনা সভা ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ‘স্ট্রোক হওয়ার আগেই প্রতিরোধ করুন’ শীর্ষক মূল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চমেক হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খান, নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী। চমেকের নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মসিহুজ্জামান আলফার সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিউরোলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. খোকন কান্তি দাশ, মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. অশোক কুমার দত্ত। উপস্থিত ছিলেন নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কায়স্থগীর, অধ্যাপক ডা. শিউলি মজুমদার, সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকার, অধ্যাপক ডা. তৌহিদুর রহমান, অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল কিবরিয়া, অধ্যাপক ডা. জামান আহম্মদ, নিউরোলজিস্ট ডা. সীমান্ত ওয়াদ্দাদার ও ডা. হুমায়ুন কবির।
নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘স্ট্রোক থেকে মুক্ত থাকতে সচেতনতা এবং সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। তাছাড়া দৈনন্দিন খাবারের ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।’
নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘স্ট্রোক দুই ধরনের একটি হলো- ইস্কেমিক এবং হেমোরজিক। ইস্কেমিক স্ট্রোক তখন হয় যখন মস্তিষ্কের রক্তনালিতে জমাট বেঁধে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। আবার হেমোরজিক স্ট্রোক হলো- যখন মস্তিষ্কের রক্তনালি ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। স্ট্রোক রোগীর পুনবার্সন প্রক্রিয়া নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। কারণ স্ট্রোকের চিকিৎসা খুবই দীর্ঘমেয়াদী।’
চমেকের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘নিউরোলজি বিভাগে চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। এই বিভাগে একজন মাত্র রেজিস্ট্রার আছে। কোনো সহকারী রেজিস্ট্রার নাই। এছাড়া রোগীর তুলনায় চিকিৎসক স্বল্প। আসলে হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডের চিত্র এমনই। পর্যাপ্ত পদ সৃষ্টি করে জনবল নিয়োগ দেয়া তাই এখন সময়ের দাবি।’
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব