ঢাকার পর প্রথম চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের হাতেই যাচ্ছে বহুল আলোচিত সেই সর্বাধুনিক ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট)। রবিবার সকাল ১০টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চট্টগ্রামের মুনসুরাবাদ অফিস থেকে আবেদনকারীদের সেই ই-পাসপোর্টগুলো বিতরণ করা হবে। এতে বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, মুনছুরাবাদ চট্টগ্রামের পরিচালক মো. আবু সাঈদসহ দায়িত্বশীল উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে দীর্ঘ আলোচনার পর করোনাকালীন সময়ে সচেতনতায় সীমিত পরিসরে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু হয়েছিল করোনা পরিস্থিতি শুরুর দিকে (২৩ মার্চ-২০২০)। কিন্তু করোনায় দেশের নানা পরিস্থিতি বিবেচনা করে উদ্বোধনের পরেই কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, মুনছুরাবাদ চট্টগ্রামের পরিচালক মো. আবু সাঈদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ই-পাসপোর্টে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। বর্তমানে এমআরপি ডেটাবেইসে যেসব তথ্য আছে তা ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে। এছাড়া চোখের মণির ছবি ও দশ আঙুলের ছাপ থাকবে।
তিনি বলেন, ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরু করতে নির্দেশনা মোতাবেক উদ্বোধন শেষে কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছিল করোনার কারণে। সেই উদ্বোধনের সময় যারা ই-পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন, তারাই ই-পাসপোর্ট পাবেন। তবে করোনা ভাইরাসসহ বিভিন্ন চলমান পরিস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সচেতনতা বেশী প্রয়োজন। ঘরোয়া পরিবেশে মুনছুরাবাদে ই-পাসপোর্ট বিতরণ করা হবে। নতুন এই ই-পাসপোর্ট সিস্টেমে সাধারণের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে আসবে। করোনা পরিস্থিতি কমে আসলে এবং এই কার্যক্রম চালু হলে দ্রুত পাসপোর্ট পেতেও আর ভোগান্তি হবে না বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা জাহেদ আহমেদ। পাঠালটুলি এলাকার ডবলমুরিং থানার বাসিন্দা। চট্টগ্রামের এই মুক্তিযোদ্ধার মাধ্যমে প্রথম ই-পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়েছিল। ই-পাসপোর্টের প্রথম সিরিয়াল নাম্বার ০০০০০১। চট্টগ্রামের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ঘরোয়া পরিসরে যাত্রা শুরু করলেও দেশের করোনা ভাইরাসের কারণে ই-পাসপোর্টসহ এমআরপির নানাবিধ কার্যক্রম করোনা পরিস্থিতির শুরুর দিকে (২৩ মার্চ-২০২০) আবারও স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া একই সাথে শীর্ষ একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড কমান্ডের ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকীসহ তিন জন এবং গোলাম মোরশেদ কাদেরি ও রাজিব রায়হান নামের নাগরিকের হাতে ই-পাসপোর্ট তুলে দেয়া হবে।
পাসপোর্ট অফিস ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিকভাবে প্রথম পর্যায়ে ঢাকায় উদ্বোধন করেছিলেন। এরপর এখন ২য় পর্যায়ে চট্টগ্রাম বিভাগেও আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। এ কার্যক্রম শুরু হলেই সাধারণ মানুষ নিজেদের পাসপোর্ট পেতে ভোগান্তি অনেকাংশে কমে আসবে।
দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশেই প্রথম ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে। একইভাবে এ পাসপোর্ট চালুর ক্ষেত্রে বিশ্বে ১১৯তম দেশ। বর্তমানে ৬ মাসের বেশি মেয়াদ থাকা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা এমআরপি পাসপোর্ট যাদের আছে তাদের ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে না। মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা নতুন করে আবেদনকারীদের দেওয়া হবে ই-পাসপোর্ট।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল