চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল শিশু স্বাস্থ্যের বাতিঘর হিসেবে খ্যাত। বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালে বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসায় অবদানও প্রশংসনীয়। প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ক্যান্সার চিকিৎসা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট। হাসপাতালটিতে এবার যোগ হচ্ছে ৫০ শয্যার আন্তর্জাতিক মানের কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় নানা প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে হাসপাাতলে আটটি সিসিইউ শয্যা আছে।
জানা যায়, জনগণের অর্থে ও স্বেচ্ছাসেবীদের উদ্যোগে পরিচালিত মা ও শিশু হাসপাতালের নবনির্মিত ১৪ তলা ভবনের ষষ্ঠ তলায় অত্যাধুনিক পূর্ণাঙ্গ কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিটটি চালু করা হবে। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণ আমদানির চুক্তিও সম্পন্ন করা হয়েছে। গত ২৩ মে খ্যাতিমান কার্ডিওলজিস্ট ডা. আবু তারেক ইকবালের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ টিম ইউনিটের ফ্লোরটি পরিদর্শন করেছেন।
আগামী আট মাসের মধ্যে সর্বশেষ প্রযুক্তি সমৃদ্ধ আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামসহ আন্তর্জাতিক মানের কার্ডিয়াক চিকিৎসা সেবা যাত্রা শুরুর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এখানে থাকবে এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি, রিং, বাইপাস, কার্ডিয়াক সার্জারিসহ হৃদরোগ সংক্রান্ত নানা রোগের সুলভ মূল্যের চিকিৎসা।
মা ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট এসএম মোরশেদ হোসেন বলেন, ১৯৭৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক শিশু বর্ষ উপলক্ষে চট্টগ্রামের কিছু মহৎপ্রাণ সমাজ হিতৈষীর উদ্যোগে শিশু হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটি ক্রমে চট্টগ্রামে বেসরকারি পর্যায়ে বৃহত্তম স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়তই এখানে নতুন নতুন সেবা যুক্ত হচ্ছে। এখন চলছে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণ। নতুন করে যুক্ত হবে আধুনিক কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট।
হাসপাতালের ট্রেজারার মো. রেজাউল করিম আজাদ বলেন, সর্বশেষ প্রযুক্তির আধুনিক চিকিৎসা উপকরণ নিয়ে আন্তর্জাতিক মানের ৫০ শয্যার কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হবে। ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে চিকিৎসা উপকরণ আমদানি চুক্তি। আগামী মাসেই যোগ দেবেন চিফ কার্ডিয়াক। একটি মানসম্পন্ন ক্যাথল্যাব প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সবকিছু যুক্ত করা হবে। আগামী ৮ মাসের মধ্যে চালুর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে।
হাসপাতালের আজীবন সদস্য ফোরামের সদস্য সচিব ম. মাহমুদুর রহমান শাওন বলেন, প্রতিনিয়ত হৃদরোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সরকারি হাসপাতালে শয্যার তুলনায় রোগীর চাপ বেশি। ফলে অনেক রোগীই চিকিৎসা বঞ্চিত হয়। তাছাড়া গরিব-অসহায় রোগীদের বেসরকারি হাসপাতালে ব্যয়বহুল এ রোগের চিকিৎসা নেওয়ার আর্থিক সক্ষমতা নেই। তাই শিশু হাসপাতালের উদ্যোগটি যথেষ্ট সময়োপযোগী। গরিব-অসহায় রোগীরাও এখানে কম মূল্যে আন্তর্জাতিক মানের সেবা পাবেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৫০ শয্যার ১৪তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করে শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। করোনাভাইরাস প্রকোপ দেখা দিলে এখানে রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু হয়। পরে যোগ হয় আরটিপিসিআর ল্যাব। আছে বিশেষায়িত শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু নিউট্রিশন বিভাগ, থ্যালাসেমিয়া ইউনিট, হেমোডায়ালাইসিস ইউনিটসহ প্রায় অর্ধশত বিভাগ। বর্তমানে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ৮০০ শয্যায় চলছে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা।
বিডি প্রতিদিন/এমআই