রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন ‘মতিহারের চত্বর মুক্ত বুদ্ধি চর্চার জায়গা। অথচ এখানে পদে পদে আঘাত হানা হচ্ছে শিক্ষকদের ওপর। এর আগে মৌলবাদী শক্তির হাতে খুন হয়েছেন তিনজন শিক্ষক। তাই আমাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতে জানে। শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে যে গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়েছে সেই মঞ্চে পুরো রাজশাহীবাসী সামিল হবে।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডের আজ অষ্টম দিনে শিক্ষক সমিতি কর্তৃক আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আশা করি এই মৃত্যুই যেন শেষ মৃত্যু হয়। আমরা অতীতেও দেখেছি অনেক মুক্ত চিন্তাকারীদেরহত্যা করা হয়েছে। একুশের বইমেলার পাশে, টিএসসির পাশে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তের দীর্ঘ সূত্রিতা সেই সময়ের ঘটনাকে মানুষের স্মৃতি থেকে মুছে ফেলেছে। স্মৃতি থেকে মুছে ফেলার একটা ষড়যন্ত্রমূলক কৌশল প্রশাসন অবলম্বন করে চলেছে।’
আজ সকাল ১০টায় মুকুল মঞ্চ থেকে মৌন মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফের মুকুল মঞ্চে এসে সমাবেশ করে ইংরেজী বিভাগ। এই সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে রাবির আইনবিভাগ, বাংলা বিভাগ, ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরীম্যানেজমেন্ট বিভাগ, লোক প্রশাসন বিভাগ, ভাষা বিভাগ, গণিত বিভাগ, অর্থনীতি এবং পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকীর ডাক নামে গড়ে তোলা এই মুকুল মঞ্চে তার ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ বলেন, ‘আমার বাবার সবচেয়ে বড় দোষ ছিলো তিনি সব সময় সত্য কথা বলতেন। তিনি সত্য বলতে কারও পরোয়া করতেন না। আমার বাবার খুনের কারণ খোঁজার চেয়ে সব থেকে বেশী জরুরি খুনিদের খুঁজে বের করা। খুনের কারণ খোঁজা অনেকটা খুনকে বৈধতা দেওয়ার সামিল।’
মুকুল মঞ্চে সমাবেশ শেষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সমিতির মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এসময় বক্তারা শিক্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।
এসময় প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ আজম শান্তনুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. শহীদুল্লাহ্, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন মিশ্র, বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক অমৃত লাল বালা, লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতি ড. মো. আওয়াল হোসেন মোল্যা, আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবু নাসের মো.ওয়াহিদ, আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সভাপতি বিশ্বজিৎ চন্দ্র, সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিমা জোহরা হাবিব প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/৩০ এপ্রিল ২০১৬/ হিমেল-১১