রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ওয়াহিদা সিফাত হত্যা মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে নির্ধারিত দিনে অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করা হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মুনসুর আলম অভিযোগটি গ্রহণ করে সব আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে আইনজীবীদের দাবির প্রেক্ষিতে সিফাতের শ্বশুর অ্যাডভোকেট রমজান আলীকে পরে জামিন দেন আদালত। আর চার্জশিটভুক্ত আসামি প্রথম ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক ডা. জোবাইদুর রহমান আত্মসমর্পণ না করায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন সিফাতের স্বামী মো. পিসলী, শাশুড়ি নাজমুন নাহার নাজলী।
আদালত সূত্র জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আহমদ আলী গত ২৩ মার্চ চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এরপর মধ্যে সিফাতের শ্বশুর অ্যাডভোকেট রমজান আলী ও শাশুড়ি নাজমুন নাহার নাজলী দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। মঙ্গলবার মামলার নির্ধারিত দিনে আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন এবং সব আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তবে এ আদেশের পর পরই সিফাতের শ্বশুর অ্যাডভোকেট রমজান আলীর জামিন মঞ্জুর করার দাবি নিয়ে বিচারকের খাস কামরায় হাজির হন বিপুল সংখ্যক আইনজীবী। তারা পুনরায় শুনানির দাবি জানান। দুপুর দেড়টার দিকে পুনঃশুনানির পর বিচারক রমজান আলীকে জামিন দেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ২৯ মার্চ সিফাতকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় সিফাতের চাচা মিজানুর রহমান খন্দকার বাদী হয়ে মামলা করেন। পুলিশ এক বছর তদন্ত শেষে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় অভিযোগপত্র দেন। প্রথম ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক ডা. জোবাইদুর রহমান ভুল রিপোর্ট দেওয়ায় এ মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয় গৃহবধূ ওয়াহিদা সিফাতকে। পাঁচ বছর আগে সিফাত ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন মোহাম্মদ হোসেন রমজানের ছেলে মো. পিসলীকে। বেকার পিসলী ব্যবসা করার জন্য সিফাতের বাবার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে তাকে চাপ দেয়। এতে সিফাত রাজি না হওয়ায় দিনের পর দিন তার ওপর চলতে থাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। নগরীর রাজপাড়া থানায় দায়ের করা মামলায় এমনই অভিযোগ করেছিলেন ওয়াহিদা সিফাতের চাচা মিজানুর রহমান খন্দকার। মামলার পর পুলিশ সিফাতের স্বামী মো. পিসলীকে আটক করে। পলাতক সিফাতের শ্বশুর মোহাম্মদ হোসেন রমজান ও শাশুড়ি নাজমুন নাহার নাজলী পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৩ মে, ২০১৬/ আফরোজ