চট্টগ্রাম মহানগরীকে জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে এবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও খাল সংস্কারের নতুন দুই পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এ দুটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নগরীর জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমবে বলে আশা চসিকের।
চসিক সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরকে জলাবদ্ধতা মুক্ত, নগরীকে বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ‘কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা নেভাল একাডেমী’ পর্যন্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যদিকে, নগরীতে বিদ্যমান ছোট-বড় ৩২টি খাল সংস্কার-পরিস্কার করতে ইতোমধ্যেই চসিকের সঙ্গে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম নগরীকে জলাবদ্ধতা মুক্ত ও নগরকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে চীনের একটি সংস্থা নগরীর খালগুলো সংস্কার করবে। এ দু’টি কাজ বাস্তবায়ন হলে নগরীর জলাবদ্ধতা অনেকাংশেই কমে যাবে। তিনি বলেন, বেড়িবাঁধ ছাড়াও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ, ২৬টি খালের মুখে রেগুলেটর নির্মাণসহ নগরের উন্নয়নে নানা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। আগামীতে নগরবাসী এসব কাজের সুফল পাবে।
কাউন্সিলর মুহাম্মদ ইসমাইল বালি বলেন, চীনের একটি সংস্থার সঙ্গে ইতোমধ্যে চুক্তি হয়েছে। তারা নগরীর ৩২টি খালের সামগ্রিক তথ্য সংগ্রহ করে আগামী তিন মাসের মধ্যে জরিপ কাজ শেষ করবে। এরপর থেকেই তারা খাল সংস্কার কাজ শুরু করবে।
জানা যায়, কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা নেভাল একাডেমী পর্যন্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পটি ইতোমধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প পরিকল্পনা (ডিপিপি) তৈরি হয়েছে। এটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্পে চসিক অর্থায়ন করবে ২৫ শতাংশ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড করবে ৭৫ শতাংশ। অন্যদিকে, নগরীর খালগুলো সংস্কার করবে চীনা সংস্থাটির নিজস্ব অর্থায়নে। বর্তমানে এর জরিপ কাজ চলমান।
সরেজমিন দেখা যায়, কালুরঘাট থেকে পতেঙ্গা নেভাল একাডেমী পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার নদী তীরের অধিকাংশ স্থানেই কোনো বাঁধ নেই। বর্ষা মৌসুম কিংবা উত্তাল জোয়ারের সময় কর্ণফুলী নদীর পানি অনেক সময় কূলে ওঠে যায়। এতে নদী তীরবর্তী মানুষেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় তীর পার্শ্ববর্তী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো। জোয়ারের ঝুঁকিতে আছে দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ। পক্ষান্তরে, মহানগরের বিদ্যমান খালগুলোর অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। কোথাও স্বয়ং খালই অস্তিত্বহীন। কোথাও খাল হয়ে গেছে নালা। আছে আবর্জনায় ভরাট ও প্রভাবশালীদের বেদখল হওয়ার ঘটনা। ফলে এসব খাল দিয়ে প্রায়ই পানি প্রবাহিত হয় না।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৯ মে, ২০১৬/ আফরোজ