ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে অবস্থানরত মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের শহর ও গ্রামীণ জীবনযাত্রা। শুক্রবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম নগরী এবং জেলার সকল উপজেলায় মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে দেশের সকল সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। সমুদ্রে চলমান সকল মাছ ধরা ট্রলার ও নৌযানকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শেখ হাসানুর রশিদ বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের উপকূল থেকে কিছুটা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরে এসে সাগরের পশ্চিম মধ্য ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল।
গত ২৪ ঘন্টায় ঘূর্ণিঝড়টি প্রায় আড়াইশ কিলোমিটার এগিয়েছে। তবে এর গতি অনেকটাই কম। বর্তমান গতি অব্যহত থাকলে এটি বাংলাদেশ উপকূলে আসতে আরো দু'দিন লাগবে।
ঘূর্ণিঝড়টি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে বলে জানান তিনি।
আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান জানান, রোয়ানু হয়তো প্রলয়ঙ্করী হয়ে ওঠার মতো শক্তি সঞ্চয় করতে পারবে না, তবে প্রচুর বৃষ্টি ঝরিয়ে ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে পাহাড়ি ঢল, আকষ্মিক বন্যা ও ভূমিধসের কারণ ঘটাতে পারে।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসে ৩৪ দশমিক ৪ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দু'দিনের টাকা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে জনজীবন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। মানুষ না পারতে বাইরে বের হচ্ছে না। শ্রমজীবি মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় চট্টগ্রামের সরকারি ও আধাসরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব রকমের ছুটি আপাতত বাতিল করা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা পর্যায়ে একটির পাশাপাশি সকল উপজেলায় কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। জেলা কন্ট্রোলরুমের নম্বর হচ্ছে ৬১১৫৪৫।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ