রংপুরে মাজার শরীফের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন ১৪ জেএমবি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। অভিযোগপত্রে ৭ জনকে গ্রেফাতর ও অন্যদের পলাতক দেখানো হয়েছে।
আট দিন আগে গত ৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হলেও সোমবার সকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউনিয়া থানার পরিদর্শক(তদন্ত) মামুন অর রশীদ মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, গত ৩ জুলাই জেএমবির ১৪ সদস্যের বিরুদ্ধে রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আসামিরা হলেন জেএমবির রংপুর আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা (৩৩), সদস্য ইছাহাক আলী (৩৪), লিটন মিয়া (৩২), আবু সাঈদ (২৮), সরোয়ার হোসেন সাবু ওরফে মিজান (৩৩), সাদাত ওরফে রতন মিয়া (২৩), তৌফিকুল ইসলাম সবুজ (৩৫), সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল (২১), নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক নজরুল ওরফে হাসান (২৬), সাখাওয়াত হোসেন (৩০), চাঁন্দু মিয়া(২০), রাজিবুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাদল ওরফে বাঁধন (২৫), বাবুল আখতার ওরফে বাবুল মাস্টার (৩৫) ও জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব ওরফে আন্ধি (২৬)।
এর মধ্যে মাসুদ রানা, ইছাহাক আলী, লিটন মিয়া, আবু সাঈদ ও চাঁন্দু মিয়ার বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলায়। সাদাত ওরফে রতন মিয়া, তৌফিকুল ইসলাম সবুজের বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব ওরফে আন্ধি ও সাখাওয়াত হোসেনর বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটায়, বাবুল আখতার ওরফে বাবুল মাষ্টার ও সরোয়ার হোসেন সাবু ওরফে মিজানের বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুরে, রাজিবুল ইসলাম মোল্লা ওরফে বাদল ওরফে বাঁধনের বাড়ি বগুড়ার শাহজাহানপুরে,সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুলের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজারহাটে এবং নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক নজরুল ওরফে হাসানের বাড়ি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায়।
১৪ আসামির মধ্যে প্রথম ৭ জন কারাগারে আছেন। সাদ্দাম, নজরুল, সাখাওয়াত, চাঁন্দু, রাজিবুল, বাবুল আখতার ও জাহাঙ্গীর পলাতক আছেন বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা মামুন।
এদিকে, মাসুদ রানা, ইছাহাক আলী, লিটন মিয়া, আবু সাঈদ, সাদ্দাম হোসেন, নজরুল ইসলাম ও সাখাওয়াত হোসেন জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিও।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামুন অর রশীদ মামুন আরও জানান, গত বছরের ১০ নভেম্বর রাতে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের চৈতার মোড়ে মাজার শরীফের খাদেম রহমত আলী(৬০) বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় মাসুদ রানার নেতৃত্বে কয়েকজন জেএমবি সদস্য খাদেম রহমতের ওপর হামলা চালান। তারা এলোপাতাড়ি কোপানোর পর গলা কেটে রহমতেকে হত্যা করে চলে যান। আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকারও করেন মাসুদ রানা।
এ ঘটনার পরপরই পুলিশ রাজাকার কমান্ডার আব্দুস ছাত্তার মাওলানার ছেলে মোর্শেদ আলী (৩৬) ও তার ভাতিজা শহিদুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা দু'জনই কাউনিয়ার মধুপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সদস্য। রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় তাদের।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, সন্দেহভাজন হিসেবে জামায়াত নেতা মোর্শেদ আলী ও শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হলেও তদন্তে তাদের জড়িত থাকার কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি।
বিডি-প্রতিদিন/১১ জুলাই, ২০১৬/মাহবুব