রংপুরে বাহাই সম্প্রদায়ের নেতা রুহুল আমীনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জামাআতুল মুজাহীদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) রংপুর আঞ্চলিক কমাণ্ডার মাসুদ রানাসহ ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
বার দিন আগে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হলেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের(ডিবি) উপপরিদর্শক(এসআই) হোসেন আলী মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গত ৩০ জুন জেএমবির ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এদের মধ্যে দুইজনকে গ্রেফতার ও অন্যদের পলাতক দেখানো হয়েছে।
কারাগারে যে সাতজন রয়েছেন, তাদের মধ্যে জেএমবির রংপুরের আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা (৩৩), সদস্য ইছাহাক আলী (৩৪), রংপুরের পীরগাছা উপজেলার বাসিন্দা।
অভিযোপত্রে পলাতক দেখানো জেএমবি সদস্যদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল (২১) ও আহসান উল্লাহ আনসারীর (৩১) বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায়, মোসাব্বিরুল আলম খন্দকার ওরফে রিপন ওরফে প্রিন্স(২২) লালমনিরহাটের বানভাসা এবং নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক নজরুল ওরফে হাসান (২৬) পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের বাসিন্দা।
এই ৬ জনের মধ্যে মাসুদ, ইছাহাক, সাদ্দাম, নজরুল ও আহসান উল্লাহ জাপানি হোশি কোনিও এবং মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভূক্ত আসামি। কোনিও হত্যা মামলায় জেএমবির ৮ এবং খাদেম হত্যায় জেএমবির ১৪ সদস্যকে আসামি করে ৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হোসেন আলী অভিযোগপত্রের বরাত দিয়ে জানান, বাহাই সম্প্রদায়ের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ও রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারি (পিএস) রুহুল আমীন গত বছরের ৮ নভেম্বর সকালে রংপুর নগরীর আরকে রোড় এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে রিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় মাসুদ রানা, ইছাহাক ও মোসাব্বিরুল একই মোটরসাইকেলে করে সেখানে আসেন। রুহুল আমীনকে লক্ষ্য করে মাসুদ রানা ও মোসাব্বিরুল দুটি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যান।
একটি গুলি রুহুলের বুকের ওপরে বিদ্ধ হয়। অন্যটি বাম পায়ে লেগে চলে যায়। বর্তমানে রুহুল সুস্থ হলেও বুকে বিদ্ধ গুলিটি বের করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন রুহুল আমীন।
এ ঘটনায় রুহুলের স্ত্রী সাইফুন নাহার বাদি হয়ে কোতয়ালী থানায় হত্যার চেষ্টা মামলা করলেও কাউকে আসামি করেননি। তবে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুর রহমান নয়ন (৩২), সমিতির সাধারণ সম্পাদকের ছেলে সজল (২৫) ও সাবেক সম্পাদকের ভাই আবু রায়হানকে (৩৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, আশিকুর, সজর ও আবু রায়হানকে গ্রেফতার করা হলেও তদন্তে তাদের জড়িত থাকার কোনো তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি।
বিডি-প্রতিদিন/ ১২ জুলাই, ২০১৬/ আফরোজ