রংপুরে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক সুমনা আক্তার লিলির শ্লীলতাহানী, মারধর এবং টাকা ও গলার স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙার ছোট ভাই মহিউল আহমেদ মহির বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১১টায় দায়ের করা মামলার বাদি সুমনা আক্তার লিলি।
এদিকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রতিমন্ত্রী রাঙার নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত মামলা নিতে গড়িমসি করার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মহির গ্রেফতার দাবি করেন তারা। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম থানায় আসার পর মামলা রুজু করতে বাধ্য হন ওসি।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ছাত্রলীগ নেত্রী সুমনা আক্তারের বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে বড়ভাই তারাগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীদ বকশীর মোটরসাইকেলে করে রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন আমের বাজারে ৫ মণ হাড়িভাঙা আম কিনতে আসেন। আম কেনার এক পর্যায়ে প্রতিমন্ত্রী রাঙার ছোট ভাই মহিউল আহমেদ মহি মোটরসাইকেলে করে তাদের পেছনে এসে হর্ন বাজাতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করলে শাহীদ বকশী নিজের রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে চেঁচামেচির কারণে হর্ণ শুনতে পাননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর ভাই মোটরসাইকেল থেকে নেমে শাহীদ বকশীকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারতে থাকেন। সুমনা ভাইকে রক্ষায় এগিয়ে এলে মহি তাকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তার চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে গায়ের জামা ধরে টানা হেঁচড়া করে তার শ্লীলতাহানী ঘটান। মহি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আমি সন্ত্রাসী, সন্ত্রাসীর জন্ম দেই’। এসময় মহি সুমনার গলায় থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও পার্সে থাকা আম কেনার ২০ হাজার ৫০০ টাকা বের করে নেওয়ার পর সুমনাকে তার মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তার চিৎকারে টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার সঙ্গে সঙ্গে মহি মোটরসাইকেলে করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
মামলার বাদি সুমনা আক্তার লিলি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মহির গ্রেফতার দাবি করেন।
জেলা ছাত্রলীগে সভাপতি মেহেদী হাসান রনি জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মহিকে গ্রেফতার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে। মহিউল আহমেদ মহির মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, যৌন নিপীড়ন ও টাকা ছিইতাইয়ের অভিযোগে মামলাটি রুজু করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তবে মামলা নিতে গড়িমসির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৩ জুলাই, ২০১৬/ আফরোজ