আাগামী বছর বর্ষা মৌসুমের আগেই সাধারণ মানুষ জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন। তার আগেই মহেশখাল খনন, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, দুপাড়ে রাস্তা নির্মাণ, এক্সেস রোড উঁচু করে পরিকল্পিত ড্রেনেজ সিস্টেম সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি বলেন, মহেশখালের অবস্থা আসলে খুব একটা ভালো নয়। অনেক জায়গা ভরাট হয়ে গেছে। আজ পাঁচ-ছয় ঘণ্টা মহেশখাল হেঁটে হেঁটে দেখেছি। আমার সাথে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ছিলেন। আমি স্থানীয়দের অনুরোধ করেছি, দেখেন জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছেন আপনারা। আপনারা যদি ময়লা-আবর্জনা খালে ফেলেন, খাল দখল করেন তবে জলাবদ্ধতা যাবে না। আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। চসিক পরিকল্পিত উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী বছর এর ভালো সুফল পাওয়া যাবে এটি আমি আশা করছি।
মেয়র নাছির বলেন, গত বছর এভাবে পানি এখানে ওঠেনি। এ বছর পানির পরিমাণটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটার পেছনে অনেকের ধারণা, মহেশখালের মুখে অস্থায়ী যে বাঁধ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে দেওয়া হয়েছে তার প্রভাব। যদিও এটা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। এ ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড, বন্দর কর্তৃপক্ষ, চসিকসহ আরও বেশ কিছু সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান বৈঠক করে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাঁধটি যত দ্রুত সম্ভব অপসারণ করা হবে। জনস্বার্থে বাঁধটি তৈরি হলেও এখন সেভাবে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। সে কারণে অপসারণের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছি। বন্দরের বোর্ড সভায় ইতিমধ্যে বাঁধ ভাঙার ব্যাপারে একমত হয়েছি। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে দ্রুত বাঁধটি অপসারণ হবে। মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে বন্দর চেয়ারম্যানের কথা হয়েছে।
আগ্রাবাদ এক্সেস রোডে ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিকল্পিত ছিল না উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আমরা জাইকার অর্থায়নে প্রকল্প গ্রহণ করেছি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে ঠিকাদার নিয়োগ ও কাজ শুরু হয়ে যাবে। পিডির সঙ্গে কথা হয়েছে। এটি হয়ে গেলে কাজ শুরু হবে। রাস্তা অনেক জায়গায় উঁচু, কোথাও নিচু। আমরা কোথাও এক-দেড় ফুট কোথাও আরও বেশি উঁচু করবো। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা সম্পন্ন করতে পারবো।
তিনি বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে একটি শহরের মধ্য দিয়ে এতগুলো খাল বাংলাদেশের আর কোনো শহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়নি। এখানে ৩৪টি খাল প্রবাহিত হয়েছে এ শহরের ওপর দিয়ে। এটি চট্টগ্রাম শহরের জন্য আলাদা একটি বৈশিষ্ট্য বা সমস্যা। মহেশখাল ১০-১২টি ওয়ার্ড ও চাক্তাই খাল ৬-৭টি খালের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আমরা চাক্তাই খালে এবার পরিকল্পিতভাবে অনেক আগে থেকে মাটি উত্তোলন করছি। এখনো চলমান আছে। মহেশখালেও শুরু করেছি। এটি দীর্ঘদিনের পুরোনো সমস্যা। এক বছরের মধ্যে আমি সমাধান করতে পারব এমন আশা করার যৌক্তিকতা নেই। ইক্যুইপমেন্ট ও আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ পাননি বলেও জানান তিনি।
গতকাল সোমবার আগ্রাবাদ এলাকায় বেপারী পাড়া, এক্সেস রোড, পতেঙ্গা, মাদারবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকা মেয়র নাছির উদ্দিন পরির্দশন করেন। এসময় চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শৈবাল দাশ সুমন, কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, এইচএম সোহেল উপস্থিত ছিলেন।