এবারের রমজানের ঈদে ট্রেনের টিকেট বিক্রয়ে প্রথম দিনের তুলনায় ২য় দিনে চট্টগ্রামে যাত্রীদের চাহিদা বেড়েছে। ভোর থেকেই ট্রেন যাত্রীদের টিকেট সংগ্রহ করতে দীর্ঘলাইন পড়ে যায়। চলমান বৈরি আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও স্থান ত্যাগ করেননি বাড়ি ফেরা ট্রেন যাত্রীরা। এতে টিকেট দ্রুত শেষ হওয়ায় লাইনে দাঁড়িয়েও পাননি টিকেট। টিকেট ছাড়ার দেড় ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হওয়ায় অধিকাংশ যাত্রী তূর্ণা ও সোনার বাংলার টিকেট পাননি। এতে হতাশ হয়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে বাড়ি ফিরেছেন আজম, রহিম ও রিফাত নামের তিন ট্রেন যাত্রী। এর আগে প্রথম দিনে ৮ ঘণ্টায়ও ৪০ শতাংশ টিকেট কাউন্টারে ছিল।
মঙ্গলবার ছিল ২২ জুনের অগ্রীম টিকেট বিক্রয়ের দিন। ওই দুটি ট্রেনের টিকেট না থাকলেও অন্যান্য ট্রেনের টিকেট বিকাল ৬টায়ও কাউন্টারে দেখা যায়। এ রমজানের ঈদকে সামনে রেখে পূর্বাঞ্চলসহ সারাদেশে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে টিকেট বিক্রয় ও মনিটরিং করার জন্য রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক এমপিসহ রেলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া রয়েছে।
পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রকৌশলী মো. আবদুল হাই বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এবার চট্টগ্রাম থেকে প্রতিদিন ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার যাত্রী পরিবহন করবে। কালোবাজারিসহ অনিয়ম রোধে বসানো হয়েছে সিসি টিভি ক্যামেরাও। এতে ট্রেনের যাত্রীদের সুবিধা ও কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে ট্রেন যাত্রী পরিবহনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সর্তক থাকতে রেলপথ মন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। তবে কোন ধরণের অনিয়মের সাথে কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্য কর্মকর্তা (সিসিএম) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, প্রথমদিনে টিকেটের চাহিদা তেমন দেখা না গেলেও ২য় দিনে যাত্রীদের চাহিদা বেড়েছে। টিকেট ছাড়ার খুবই কম সময়ের মধ্যেই তূর্ণা এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা ট্রেনের সব টিকেট শেষ হয়ে যায়। উক্ত দুটি ট্রেন ছাড়া অন্য সবগুলো ট্রেনের টিকেট কাউন্টারে রয়েছে। তবে যতক্ষণ টিকেট থাকবে ততক্ষণ যাত্রীরা তা সংগ্রহ করতে পারবেন। এর আগে প্রথম দিনেই ৮ ঘন্টায়ও ৪০ শতাংশ টিকেট কাউন্টারে রয়ে যায়। তবে ঈদের অগ্রীম টিকেটের জন্য এখন থেকে ভীড় থাকবে বলে জানান তিনি। একই কথা বললেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা (ডিসিও) মিজানুর রহমান।
রেলওয়ে সূত্র জানা যায়, অগ্রিম টিকেট বিক্রি কার্যক্রমে আজ ১৩ জুন দেওয়া হয় ২২ জুনের টিকেট। একইভাবে আগামীকাল ১৪ জুন ২৩ জুনের, ১৫ জুন ২৪ জুনের ও ১৬ জুন দেওয়া হবে ২৫ জুনের টিকেট। ১৯ জুন ২৮ জুনের, ২০ জুন ২৯ জুনের, ২১ জুন ৩০ জুনের, ২২ জুন ১ জুলাই ও ২৩ জুন ২ জুলাইয়ের ফিরতি টিকেট দেওয়া হবে। সুবর্ণ এক্সপ্রেস প্রতিদিন সকাল সাতটায়, মহানগর গোধূলী বিকেল ৩টায়, চট্টলা এক্সপ্রেস সকাল সোয়া ৮টায়, মহানগর এক্সপ্রেস বেলা সাড়ে ১২টায়, সোনার বাংলা বিকেল ৫টায় এবং তূর্ণা এক্সপ্রেস রাত ১১টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যাবে।
পাহাড়িকা সকাল সোয়া ৯টায়, উদয়ন এক্সপ্রেস রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিলেটের উদ্দেশ্যে, মেঘনা এক্সপ্রেস বিকেল সোয়া পাঁচটায় চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে এবং বিজয় এক্সপ্রেস সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছেড়ে যাবে। কর্ণফুলী এক্সপ্রেস সকাল ১০টায় ও ঢাকা মেইল এক্সপ্রেস রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে, সাগরিকা এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে ৭টায় চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস বিকেল সাড়ে ৩টায় বাহাদুরাবাদ’র উদ্দেশ্যে ও জালালাবাদ এক্সপ্রেস রাত সাড়ে ৯টায় সিলেটের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যাবে।
এছাড়া ঈদের আগে ২৩ জুন থেকে চট্টগ্রাম চাঁদপুর রুটে দুই জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। চাঁদপুর স্পেশাল-১ ট্রেনটি সকাল সাড়ে ১১টায় এবং চাঁদপুর স্পেশাল-২ বিকেল সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যাবে।
বিডি প্রতিদিন/১৩ জুন ২০১৭/হিমেল