দীর্ঘদিন ধরেই সাংগঠনিক কার্যক্রম তেমন না থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার তৃণমূলে চাঙ্গাভাব বা নড়েচড়ে উঠছে চট্টগ্রামের জাতীয় পার্টিতে। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার তিন সাংগঠনিক কমিটির নেতারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সভা-সমাবেশ, সাংগঠনিক মিটিং এবং সংগঠনের দিক নির্দেশনামূলক জরুরি বৈঠকও হচ্ছে নিয়মিত।
চট্টগ্রামের রাজনীতির মাঠে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় উপস্থিত হচ্ছেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ও পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কোতোয়ালী আসনের সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুসহ নগর, উত্তর ও দক্ষিণের নেতারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ তিন সাংগঠনিক কমিটির শীর্ষ নেতারা তৃনমূলের নেতাদের নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে প্রতিনিয়ত অংশগ্রহণ করছেন। চলমান রোহিঙ্গা ইস্যুতেও ত্রাণ বিতরণসহ নানাবিধ কর্মকান্ডেও মাঠে আছেন তারা। জাতীয় পার্টির নেতাদের তৎপরতা দেখে অন্য দলের নেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানাবিধ প্রশ্ন। সম্প্রতি পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানের অনুসারীরা। এ অনুষ্ঠানে দলের প্রধান হুসেইন মো. এরশাদসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থাকার কথা ছিল। এ ঘটনায় সম্প্রতি সকাল-সন্ধ্যা বাশঁখালীতে শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে হরতালও পালিত হয়।
চট্টগ্রাম নগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মেহজাবিন মোরশেদ এমপি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মাঠে কাজ করছি। নিয়মিত সাংগঠনিক দলীয় কর্মকান্ডে উপস্থিত থেকে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ এবং দল এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তৃনমূলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সাংগঠনিক কর্মকান্ডও নিয়মিত করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে দলের প্রধান হুসাইন মো. এরশাদের নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের মাঝে বিভিন্ন ধরণের ত্রাণ বিতরণও করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দলের নেতারাও ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে সাংগঠনিক কাজও করছি। তবে দলের প্রধানের নেতৃত্বে আগামি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো বলে জানান তিনি।
নগর জাতীয় পার্টির নেতা রেজাউল করিম রেজা বলেন, জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা ও মনোনয়নের বিষয়ে বিভিন্ন দলের একটি গ্রুপ নানাভাবে যড়যন্ত্র করছেন। দলীয় কর্মসূচিতেও বাধার সৃষ্টি করছেন। তিনি বলেন, দলীয় প্রধানের (এরশাদ) নির্দেশনায় মেহজাবিন মোরশেদের নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সাংগঠনিকভাবে চলছে রাজনৈতিক কর্মসূচিও। আগামি নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পার্টিও কোথায় কোথায় দলীয় মনোনয়ন দিবেন তা আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।
দলীয় সূত্র জানা যায়, চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক কমিটির নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার ৩৩৩ সদস্যের মধ্যে অধিকাংশ সদস্যই নিস্ত্রিয় রয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শীর্ষ নেতারা বর্তমানে সাংগঠনিক কাজসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। তাছাড়া দলের প্রধান হুসেইন মো. এরশাদ ৩০০ আসন থেকেই দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দেবেন বলেও জানান বিভিন্ন সভা-সমাবেশে। এরপর থেকেই আরো সক্রিয় হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের দলীয় নেতারা। তবে আগের মতোই মাঠ ধরে রেখেছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, নগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি মেহজাবিন মোরশেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক নগর জাপার সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠ, পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সামশুল ইসলামও। এতে সবমিলে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নড়েচড়ে উঠেছেন নগর ও জেলার অন্য শীর্ষ নেতারা।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার