রাজধানীতে গড়ে উঠছে দেশের প্রথম ‘আরবান ট্রি মিউজিয়াম’ ও ‘বৃক্ষ সেবা ও ছাদবাগান সহায়তা কেন্দ্র।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে এবং গ্রিন সেভার্স ও ডেল্টা ডট লিমিটেড-এর সহযোগিতায় এই কেন্দ্র গড়ে উঠছে।
এই দুই উদ্যোগ বাস্তবায়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে বুধবার নগর ভবনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, গ্রিন সেভার্স ও ডেল্টা ডট লিমিটেড-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জোবায়ের হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “আরবান ট্রি মিউজিয়াম এবং বৃক্ষ সেবা ও ছাদবাগান সহায়তা কেন্দ্র একসঙ্গে নগরের মানুষকে প্রকৃতির সঙ্গে যুক্ত করবে। এটি হবে শেখা, অংশগ্রহণ ও প্রকৃতিকে ভালোবাসার জায়গা। গাছের যত্ন মানে নিজের জীবনের যত্ন।”
রাজউক উত্তরা বর্ধিত প্রকল্প (ফেইজ-৩) এলাকায় প্রতিষ্ঠিত এই অনন্য মিউজিয়াম নগর সবুজায়ন, বৃক্ষ সংরক্ষণ ও নাগরিক সচেতনতার নতুন অধ্যায় সূচনা করবে।
‘আরবান ট্রি মিউজিয়াম’-এ ঢাকার বিলুপ্তপ্রায়, বিপন্ন ও দেশীয় বৃক্ষ প্রজাতির একটি সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা তৈরি করা হবে। এটি শুধু প্রদর্শনীর স্থান নয়, এখানে থাকবে গবেষণা, শিক্ষা ও বিনোদনের সুযোগ, যাতে নগরবাসী প্রকৃতির সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হতে পারেন।
মিউজিয়ামটি হবে নগর বনায়ন ও পরিবেশ পুনরুদ্ধারের প্রতীক, যা নাগরিকদের সবুজের প্রতি ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তুলবে।
একইসঙ্গে গুলশান শহীদ তাজউদ্দিন স্মৃতি পার্কে ডিএনসিসি ও গ্রিন সেভার্স যৌথভাবে গড়ে তুলছে ‘বৃক্ষ সেবা ও ছাদবাগান সহায়তা কেন্দ্র’। এই কেন্দ্রটি নগরবাসীর জন্য একক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে যেখানে নাগরিকরা তাঁদের অসুস্থ বা আক্রান্ত গাছের পাতা, ফল বা মাটির নমুনা এনে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পরামর্শ নিতে পারবেন।
কেন্দ্রটিতে থাকবে গাছের জন্য বিশেষায়িত ‘ট্রি হসপিটাল’, প্ল্যান্ট ফার্মেসি ও ল্যাবরেটরি, যেখানে জৈব বিশ্লেষণ, মাটির উপযোগিতা পরীক্ষা, কীটপতঙ্গ শনাক্তকরণ এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ, ভিটামিন ও উদ্ভিদের অণুখাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা।
এছাড়া নাগরিকদের জন্য থাকবে সবুজ পরিবেশে বই পড়া ও বিশ্রামের স্থান, স্বল্পমূল্যে গাছের চারা ক্রয়ের সুযোগ এবং গাছপ্রেমীদের জন্য ‘গাছের শেল্টার হোম’ সুবিধা-যেখানে কেউ ভ্রমণে গেলে নিজের গাছ জমা দিয়ে যেতে পারবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই সমন্বিত উদ্যোগগুলো নগর পরিবেশ পুনরুদ্ধার, সবুজ অবকাঠামো উন্নয়ন ও টেকসই নগরায়নের পথে বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত