সুন্দরবনে চোরা শিকারীদের ফাঁদে পড়েছিল বাঘিনীটি। পরে একটি পা হারায় সে। সেখান থেকে বন বিভাগের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজারের ডুলাহাজরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে পাঠান। পরে ২০১৩ সালে ২৪ মে তিন পায়ের বাঘিনীর ঠাঁই হয় গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা আরও নয়টি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাথে। কিন্তু প্রাকৃতিক পরিবেশে সুন্দর বনের এ বাঘিনী নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেননি আফ্রিকান বাঘের সাথে। সব সময় একা একাই বসে থাকতো সে, মাঝে মধ্যে তার গর্জনে আফ্রিকার রয়েল বেঙ্গল টাইগারও চুপসে যেতো। এরই মধ্যে প্রজননে পূর্ণাঙ্গ বয়স অতিক্রম করায় সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রজননের চেষ্টা শুরু করে বাঘিনীটির। গত বুধবার আফ্রিকার পুরুষ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাথেই তাকে মিলিত করার উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ ট্রাঙ্কুলাইজার গানে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে তাকে অচেতন করেন। তবে অচেতন হওয়ার পরই আফ্রিকান কয়েকটি বাঘ এসে আক্রমন করে আহত করে তাকে। পরে সেবা ও শুশ্রূয়া দিলেও সে আর সুস্থ হয়ে উঠেনি। রবিবার সকালে সে মারা যায়।
বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন জানান, বাঘিনীকে আমরা বংশবিস্তারের লক্ষ্যে প্রজননের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু বার্ধক্যজনিত সমস্যা থাকায় সে গর্ভধারণ করেনি। বাঘের মৃত্যুর ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
ময়নাতদন্তকারী দলের সদস্য শ্রীপুর উপজেলার প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল জলিল জানান, প্রাথমিকভাবে বন্যপ্রাণী বাঘের মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না। তবে বাঘটির গায়ে বিচ্ছিন্ন কিছু আঘাতের চিহ্ন ছিল। আমরা প্রাথমিক স্যাম্পল সংগ্রহ করে ঢাকার কেন্দ্রীয় পশু রোগ গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করেছি। রিপোর্টটি হাতে আসলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে বলেও তিনি জানান।
বিডি-প্রতিদিন/০১ এপ্রিল, ২০১৮/মাহবুব