কুমিল্লায় শিশু শেখ ফরিদের জিন তাড়ানোর নামে তাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মাহবুবুর রহমান নামের এক কবিরাজের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত এই কবিরাজের বাড়ি কুমিল্লা সদর উপজেলার কুচাইতলী বারপাড়ায়। সেখানে হিযবুল্লাহ মসজিদের পাশে তার আস্তানা। মামলা হওয়ার পর কবিরাজ মাহবুব গা-ঢাকা দিয়েছে। শিশু শেখ ফরিদ কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি সিন্দুরিয়া পাড়া গ্রামের প্রাবাসী জামাল হোসেনের ছেলে।
শিশুর পরিবার সূত্র জানায়, তিন বছরের ছোট্ট শিশু শেখ ফরিদ দুষ্টমি বেশি করার কারণে শুক্রবার সকালে ওই কবিরাজের কাছে নিয়ে যায় তার মা। কবিরাজের দেওয়া শর্ত মতে সন্তানের দুষ্টুমি কমাতে মা তার সন্তানকে তিন দিনের জন্য কবিরাজের কাছে রেখে আসে। রাতে ফরিদের মা ফোন দিয়ে কবিরাজের কাছে ছেলের খবর নেয়। কবিরাজ জানায় ছেলে ফরিদ ভালো আছে। চিকিৎসা চলছে, রবিবারে এসে নিয়ে যাবেন। একবারে ভদ্র ও শান্ত হয়ে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু শনিবার দুপুরে শিশু শেখ ফরিদের মৃত দেহ সাদা কাফনে মোড়ানো এম্বুলেন্সে করে তার বাড়িতে পাঠায় কবিরাজ। কবিরাজ ফোন করে জানায়, ‘জিনে মেরে ফেলেছে সকালে, গোসল জানাজা হয়ে গেছে দাফন করে দিন’। এম্বুলেন্সের সাথে কবিরাজ তার এক খাদেমকেও পাঠায়।
এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর ওই এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে শিশুর মামাতো ভাই জাহিদ হোসেন এবং নিকটাত্মীয় মোবারক মিয়া পুলিশকে জানালে পুলিশ কবিরাজ মাহবুবুর রহমানের খাদেম ও অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভারকে আটক করে। তাদের আটকের খবর পেয়ে কবিরাজ মাহবুবুর রহমান তার আস্তানা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
স্থানীয় ইকবাল হোসেন লস্কর বলেন, মাহবুব ভণ্ড ও প্রতারক। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। সে জিন চিকিৎসার নামে শিশুটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।
ফরিদের ময়নাতদন্ত করা চিকিৎসক ডা. ওমর ফারুক জানান, তার গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এগুলো বেত্রাঘাত বলে মনে হচ্ছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি আবু ছালাম মিয়া জানান, লাশ ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ফরিদের গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রবিবার ভনণ্ড কবিরাজ মাহবুব ও তার খাদেম শাহাদাত হোসেনের নাম উল্লেখ করে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় ফরিদের মা মামলা দায়ের করেছেন। খাদেমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভণ্ড কবিরাজ মাহবুবকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/০২ এপ্রিল, ২০১৮/মাহবুব