বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হার ৭৭.১১ ভাগ। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৪শ’ ৬২৩ জন। গত বছরের (২ হাজার ২শ’ ৮৮জন) তুলানায় এবার জিপিএ-৫ বাড়লেও পাশের হার ০.১৩ ভাগ কমেছে। অংক এবং ইংরেজী বিষয়ে তুলনামূলক ফল খারাপ হওয়ায় সার্বিক ফলাফল অবনমন হয়েছে দাবি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের। এবার বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধিন ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ এবং ৩টি স্কুলের শতভাগ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। গত বছর বরিশালে ৮৭টি স্কুলের শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ এবং ২টি স্কুলের শতভাগ পরীক্ষার্থী ফেল করেছিলো।
রবিবার সকাল সোয়া ১১টায় নিজ দপ্তরে এবারের এসএসসি পরীক্ষার পরিসংখ্যানগত ফল ঘোষণা করেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আনোয়ারুল আজিম।
পরিসংখ্যানে জানা যায়, এবার বরিশাল বোর্ডে এবার ১ হাজার ৪শ’ ২৫টি স্কুলের ১ লাখ ৩ হাজার ১ শ’ ২৪ জন শিক্ষার্থী ১৭২টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৭৯ হাজার ৫২০ জন পাশ করেছে । অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে ৫১ হাজার ৯ শ’ ১২ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ছিলো ৫১ হাজার ২ শ’ ১২ জন। পাশ করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৯ হাজার ৫১ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৪০ হাজার ৪৬৯ জন। বরিশাল বোর্ডে এবার ফল বিপর্যয় হয়েছে মানবিক বিভাগে। মানবিক বিভাগে পাশের হার সর্বনিম্ন ৬৮.৬৯ভাগ। বিজ্ঞান বিভাগের পাশের হার সর্বোচ্চ ৮৯.৭০ ভাগ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাশের হার ৭৯.১৫ ভাগ।
দুপুর সোয়া ১টার দিকে স্কুল পর্যায়ে ফল ঘোষনার পর উল্লাসে ফেটে পড়েন উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের পরও প্রত্যাশিত ফল পেয়ে আনন্দে আত্মহারা শিক্ষার্থীরা কৃতিত্ব দিয়েছেন শিক্ষক এবং অভিভাবকদের।
সন্তানদের ভাল ফলাফলে মহান আল্লাহতালার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অভিভাবকরা। শিক্ষার্থীদের প্রতি আরও যত্নশীল এবং আন্তরিক হলে আগামী দিনে ফলাফল আরও ভালো হবে প্রত্যাশা অভিভাবকদের।
বরিশাল বিভাগের মধ্যে ৫০টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে। এরমধ্যে বরিশাল সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৫৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাশ করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০৫ জন। অপরদিকে বরিশাল জিলা স্কুল থেকে ২৫৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাশ করেছে। জিলা স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৭৪ জন।
শিক্ষক ও অভিভাবকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে মানসম্পন্ন স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে ভাল ফল করছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা হোসেন।
অপরদিকে এবার বরিশাল বোর্ডের মধ্যে ঝালকাঠীর ইসলামপুর সেকেন্ডারী স্কুল থেকে ১৭ জন, একই জেলার ভেরনবাড়িয়া সিএসইউ গার্লস হাইস্কুল থেকে ৫ জন এবং পটুয়াখালীর উত্তর মৌকরন এএইচ সেকেন্ডারী স্কুল থেকে ৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এই ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।
বরিশাল বিভাগের মধ্যে এবার পাশের হারে ভোলা জেলা সবার শীর্ষে। ভোলা জেলার পাশের হার ৮৩.০২ ভাগ। তবে সার্বিক ফলাফলে পটুয়াখালী জেলা সবার উপরে। এর পর রয়েছে যথাক্রমে বরগুনা, বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা এবং সবার নীচে ঝালকাঠী জেলার অবস্থান।
২০১৫ সালে বরিশাল বোর্ডে পাশের হার ছিলো ৮৪.৩৭ ভাগ, ২০১৬ সালে ৭৯.৪১ ভাগ এবং ২০১৭ সালে পাশের হার ছিলো ৭৭.২৪ ভাগ।
বিডি প্রতিদিন/৬ মে ২০১৮/ওয়াসিফ/হিমেল