২১ জুন, ২০১৮ ২২:২০

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি’র দাবিতে সরব সংসদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি’র দাবিতে সরব সংসদ

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির কাজ দ্রুত শুরু করার দাবিতে সংসদে একযোগে সরব হয়েছেন সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা। প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা বলেন, এমপিওভুক্তি বন্ধ থাকার ফলে হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমাদের আশ্বস্থ করা হচ্ছে এমপিও হবে। আমরা আশ্বাস চাই না। দ্রুত এমপিওভুক্তির কার্যক্রম শুরু করা হোক। প্রয়োজনে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়ানো হোক। প্রয়োজনে বিশেষ বরাদ্দের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
সংসদের বাজেটে অধিবেশনে আজ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এমপিরা এ দাবি জানান। বিকালে অধিবেশনের শুরুতে বৈঠকে সভাপতিত্ব করে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া।
দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্তির কার্যক্রম বন্ধ থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জেপি’র মো. রুহুল আমিন বলেন, সরকার শিক্ষার প্রসারে ব্যাপক পদক্ষেপ নিলেও কয়েক হাজার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবহেলিত। অনেক শিক্ষক ১৫ থেকে ২০ বছর নামমাত্র বেতনে পাঠদান করছে। আগামী নির্বাচনে ভোটের কথা বিবেচনায় তিনি এমপিওভুক্তির কার্যক্রম এখনই শুরু করতে হবে।
জাতীয় পার্টির সদস্য নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, হাজার হাজার শিক্ষকরা রাস্তায়। তারা শ্রেণি কক্ষে পাঠদানের পরিবর্তে আন্দোলনে নেমেছে। কিন্তু দেশবাসী প্রত্যাশা করলেও বাজেটে এবিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেই। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা লুট হয়ে গেল, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়ে গেল, পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারী ঘটলো, কিন্তু দোষী কাউকেই ধরা হলো না, শাস্তি হলো না। যে অন্যায় করে, আর যারা অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় তারা উভয়েই দোষী। কিন্তু বাজেটে এ নিয়ে কোন কথা নেই।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহমানও এমপিওভুক্তির কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার আহ্বান জানান। শিক্ষাখাতে আমাদের অনেক অর্জন রয়েছে। সেটা ধরে রাখতে হবে। আগামী নির্বাচনকে বানচাল করতে একটি রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অনিবার্য করে তোলার ষড়যন্ত্র চলছে উলে­খ করে তিনি বলেন, এদেশে অনেক নিবন্ধিত দল আছে। নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের সময় যে নির্বাচনকালিন সরকার দায়িত্ব পালন করবে সেই সরকারের প্রধান হবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই কোনো ষড়যন্ত্রে কাজ হবে না। নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। যারা ষড়যন্ত্র করছেন তারা ষড়যন্ত্রের পথ ছেড়ে দিন।
সরকারি দলের মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, রাশিয়ার মানুষ ভ্লাদিমির পুতিনকে ২৫ বছর দেশ পরিচালনার সুযোগ দিয়েছে, মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মদ টানা ২২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর আবার তিনি ক্ষমতাসীন হয়েছেন। এ কারণেই দেশ দু’টির এতো উন্নতি। বাংলাদেশের মানুষও আগামী নির্বাচনে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পৌঁছানোর জন্য শেখ হাসিনার অব্যাহত শাসন নিশ্চিত করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করবেন। তিনি আরো বলেন, শিক্ষা বান্ধব এই সরকারের কাছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিভ‚ক্তির প্রত্যাশা করে। সুশিক্ষা বিকাশে এবিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।
জাতীয় পার্টির শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত বিশাল বাজেট বাস্তবায়ন করা বিশাল চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নৈতিক শক্ত অবস্থানের প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, ব্যাংকগুলোতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও হরিলুটের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তার কোন তথ্য এই বাজেটে নেই। প্রতিবছরই বিপুল সংখ্যেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। এদের কর্মসংস্থানেরও কোন দিক-নির্দেশনা নেই বাজেটে। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে।
কোনো দল নির্বাচনে আসলো কি আসলো না আ’লীগের দেখার বিষয় না
সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া পড়েনি। দেশ যখন সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন পরাজিত অপশক্তি বিএনপি-জামায়াত দেশে-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্তে মেতে উঠেছে। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে কে আসলো বা কে আসলো না, এটা আওয়ামী লীগ কিংবা সরকারের কোন ব্যাপার নয়। এটি যে কোন রাজনৈতিক দলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আগামী নির্বাচনে জনগণ ফের আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত বরেন।
বাজেট আলোচনায় আরো অংশ নেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, সরকারি দলের ইউনুস আলী সরকার, মো. মাহবুব আলী, ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, সাবিনা আক্তার তুহিন, সেলিনা বেগম, বেগম ওয়াশিকা আয়শা খান, বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম তালুকদার প্রমুখ।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর