সাখাওয়াতকে না পেলে আত্মহত্যা করবো বলে প্রায় ফোন দিতেন লিজা। আর সাখাওয়াত ফোনে জানাতেন লিজা আসলে সেও আত্মহত্যা করবে। এমন হুমকি প্রায় আসতো চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিন্টু রহমানের কাছে। নাচোল থানায় কর্মরত এই পুলিশ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে লিজার গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার পেছনে পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কি না, সেটি গঠন করা তদন্ত কমিটি শনিবার রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তবে তদন্ত রিপোর্ট প্রসঙ্গে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও কিছু বলা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে সাখাওয়াত ফোন দিয়ে বলে স্যার আমি আত্মহত্যা করবো। আমার কিছু ভাল লাগে না।’ তখন মিন্টু রহমান সাখাওয়াতকে বিভিন্নভাবে বোঝান। তার একদিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে আবার লিজা ফোন দিয়ে আত্মহত্যা করবে বলে জানায়। তখনও এই কর্মকর্তা তাকে বোঝান। তিনি থানায় গিয়ে পুলিশকে সব বিষয় খুলে বলতে বলেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মিন্টু রহমান বলেন, ‘প্রায় একমাস আগের কথা। রাজশাহীতে না পেয়ে লিজা চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে সাখাওয়াতকে খুঁজতে আসে। বিষয়টি এলাকার মেম্বার আবুল খায়ের বুঝতে পেরে রাত আড়াইটার দিকে পুলিশকে জানায়। পরের দিন পুলিশ সাখাওয়াত ও তার বাবাকে থানায় নিয়ে আসে। এসময় লিজা সাখাওয়াতের বাবাকে সালাম করে। পরে সাখাওয়াতের জিম্মায় দেওয়া হয় লিজাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে লিজা একটু রাগী মেজাজের মেয়ে। কোনো কথা বোঝালে বুঝতো, কিন্তু একটু পরে নিজের মতই করে চলতো। তবে দুজনের মধ্যে মিল করে দেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লিজার মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে স্বামী সাখাওয়াতের পরিবার সম্পর্কে এলাকার কেউ মুখ খুলছে না। এছাড়া নাচোল উপজেলার খান্ধুরা গ্রামের বাড়িতে ঝুলছে তালা। লিজার মৃত্যু ও মামলা বিষয়ে জানতে পেরে তারা গা-ঢাকা দিয়েছে।
নগর পুলিশের মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, লিজার আত্মহত্যার পেছনে পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কি না, সেটি জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তবে এ নিয়ে গণমাধ্যমে নগর পুলিশ কমিশনার নিজেই কথা বলবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর গায়ে আগুন দেওয়ার পরে রাতে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। শরীরের ৬৩ শতাংশ দগ্ধ হয়ে ঢামেক’র বার্ন ইউনিটে কলেজছাত্রী লিজা টানা চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যুবরণ করেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন