করোনা সংক্রমণ এড়াতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পর বিভিন্ন স্থানে যানবাহন ও দোকানপাঠ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নাগরিকদের বলা হয়েছে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে। আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে আশঙ্কায় নিত্যপণ্য কেনার হিড়িক পড়েছে বরিশালে। ক্রেতারা পণ্য কিনে মজুদ করায় বিক্রেতারাও বাড়িয়ে দিয়েছেন সব নিত্য পণ্যের দাম।
গত ২/৩ দিনের ব্যবধানে বরিশালে সব ধরনের চালে কেজিতে দাম বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। ৪০ টাকা কেজি দরের পিয়াজ এক লাফে উঠেছে ৭০ টাকায়। এছাড়া রসুন, আদা, ভোজ্য তেল, কাঁচা তরকারি, মাছসহ বেড়েছে সব নিত্যপণ্যের দাম। এতে বেকায়দায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে দোকানিরা পণ্যের দাম বাড়ার দায় চাপিয়েছেন ক্রেতার উপরই। যদিও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে জেলা প্রশাসন তৎপর বলে দাবি করা হয়েছে।
গত বুধবারও বরিশালের খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকা দরে। এক দিনের ব্যবধানে হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার সেই চাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪০ টাকায়। চিকন চালের দামও প্রকার ভেদে ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে প্রতি কেজিতে। করোনা আতঙ্কে ৪০ টাকা কেজি দরের পিয়াজও বৃহস্পতিবার এক লাফে ৭০ টাকায় উঠেছে। ১৪০ টাকা লিটারের সরিষার তেল ১৮০ টাকায় বিক্রির দায়ে শনিবার নগরীর হাটখোলা রোডের একটি অয়েল মিল কর্তৃপক্ষকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এর আগে গত শুক্রবারও ভ্রাম্যমাণ আদালত নগরীর ফরিয়াপট্টিতে গিয়ে চালের আড়তগুলোতে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা এবং অতিরিক্ত মূল্যে চাল বিক্রির প্রমাণ পায়। এ সময় সিমেলিত বানিজ্য ভান্ডারকে ২৫ হাজার, প্রতিমা এন্টারপ্রাইজকে ৩০ হাজার এবং খুচরা ব্যবসায়ী ভাইভাই স্টোরকে ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
শুধু চাল আর ভোজ্য তেল নয়, আদা, রসুন, কাঁচা তরকারি, মাছসহ সব নিত্য পণ্যের দাম বেড়েছে কোনো কারণ ছাড়াই। এতে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে নিত্য পণ্যের প্রচুর মজুদ আছে। করোনা ইস্যুতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ব্যবসায়ীরা সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তারা বাজার স্থিতিশীল করতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছেন।
বাজার রোডের মুদি দোকানি আব্দুর রহমান জানান, যার লাগে ১ কেজি পিয়াজ সে কেনে ১০ কেজি। এভাবে বাজারে হঠাৎ সব নিত্য পণ্যের ব্যাপক চাহিদা হয়েছে। ব্যবসায়ীরাও যে দাম চায় ক্রেতারা সেই দামেই কিনে নিচ্ছেন।
পণ্যের দাম বাড়ার কথা স্বীকার করে এর সমুদয় দায় উল্টো ক্রেতার উপর চাপাচ্ছেন ক্রেতারা। তাদের দাবি, ক্রেতারা চাহিদার অতিরিক্ত পণ্য কেনায় বাজারে গুজব-গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব মোকাম থেকে আড়তদার এবং খুচরা বাজারেও পড়েছে।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বাজারে কোনো নিত্য পণ্যের সংকট নেই। প্রচুর পণ্য মজুদ রয়েছে। কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার অস্থিতিশীল করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে নিচ্ছে প্রশাসন।
করোনা ইস্যুতে ফায়দা লুটতে অতিরিক্ত মূল্যে চাল বিক্রির দায়ে বৃহস্পতিবার ২টি চালের আড়তসহ ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ৬৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন