করোনা দুর্যোগে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে না থেকে ই-কর্মাসে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন। করোনার কারণে গত মার্চ মাস থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাড়িতে বসে লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেকে শিক্ষার্থী ই-কর্মাসে বাড়তি টাকা আয়ের চেষ্টা করছেন। অনলাইনের মাধ্যমে তারা পণ্য কেনা-বেচা করছে।
নুর-ই জান্নাত জৌতির বাড়ি রংপুর নগরীতে। দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালযের আর্কিটেক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাড়িতে চলে এসেছেন তিনি। বাড়িতে লেখাপড়ার পাশাপাশি ‘পরিধান’ নামক একটি অনলাইন পেজের মাধ্যমে ই-কর্মাস শুরু করেছেন। অনলাইনে সে দেশী বিদেশী শাড়ি বিক্রির চেষ্টা করছে। রংপুরের গঙ্গাচড়ার বেনারসি পল্লী থেকে নগদ টাকায় বেশকিছু বেনারসি শাড়ি ক্রয় করেছেন। তিনি আশাবাদী ই-কমার্সে সফল হবেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালযের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া জান্নতুলও ৪ মাস থেকে বাড়িতে বসে আছেন। তিনি অরন্যক নাম একটি পেজ খুলে হাতে তৈরী গয়না, কুশি কাটার পোষাক, বাচ্চাদের পোষাক বিক্রির চেষ্টা করছেন। তিনি এসব বাড়িতে বসে নিজেই তৈরী করছেন।
নাজির হোসেন সদ্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন। করোনা কারণে কোথাও চাকরিও পাচ্ছে না। তিনি ঘর সাজানোর ইলেকট্রিক পণ্য অনলাইনে বিক্রি করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন। আব্দুল্লাহ হিল কাফি, ফারজানা ইসমিন সোমাসহ অনেক শিক্ষার্থীই অনলাইনে ব্যবসা করে বাড়তি কিছু আয়ের চেষ্টা করছে।
এসব শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, করোনা দেশের অর্থনীতিতে আঘাত হেনেছে। পাশ করার পর সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকরি পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে। তাই চাকরির আশায় না থেকে ঘরে বসে অনলাইনে ব্যবসা করার চেষ্টা করছি। তারা জানান, কেউ কোন পণ্যেও অর্ডার দিলে তার বাড়িতেই সেসব পণ্য পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। তারা জানান, ইলেক্ট্রনিক নেটওয়ার্ক, বিশেষ করে, ইন্টারেনট ব্যবহার করে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়, অর্থ লেনদেন ও ডাটা আদান-প্রদানের মাধ্যমেই এ ব্যবসা করা হচ্ছে।
হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুর-ই জান্নাত জৌতি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সব শিক্ষার্থী বাড়িতে বসে ই-কর্মাসের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন তাদের প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা দিলে ভবিষ্যতে ওই সব শিক্ষার্থীর সরকারি চাকরি পিছনে ঘুরতে হবে না। তারা নিজেরাই উদ্যোক্তা হিসেবে অন্যকে চাকরি দিতে পারবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল