৮ মে, ২০২১ ২০:২৬

রংপুরে বোরো ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের সফলতা নিয়ে শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরে বোরো ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের সফলতা নিয়ে শঙ্কা

ফাইল ছবি

গত আমন মৌসুমে রংপুর জেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৩৮২ মেট্রিক টন। এর মধ্যে পীরগঞ্জ উপজেলায় সংগ্রহ হয়েছে মাত্র দুই মেট্রিক টন। বাকি সাত উপজেলায় ধান সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। এছাড়াও ১৭ হাজার ৬৩৮ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের কথা থাকলেও মিল মালিকরা হস্তান্তর করেছেন মাত্র এক হাজার ৫৩৫ মেট্রিক টন চাল। 

আমন সংগ্রহ অভিযানে ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে খাদ্য বিভাগ চলতি বোরো মৌসুমে রংপুরে আবারো ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু করলেও এর সফলতা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। কারণ কৃষকদের বোরো ধান সরবরাহে অনিহা রয়েছে।  

গত মঙ্গলবার রংপুর সদর খাদ্য গুদামে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আসিব আহসান। ধানের দাম গত বছরের চেয়ে কৃষকরা এক টাকা বেশি পাবেন এবার। আর চাল সরবরাহকারী ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি চালে বাড়তি পাবেন তিন টাকা। সরকার নির্ধারিত দামের তুলনায় বাজারে দাম বেশি হলে গত আমন মৌসুমের মত বোরোতেও সেই প্রভাব পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষক ও মিলাররা ধান সরবরাহে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।  

জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পরিপত্র অনুযায়ী রংপুর সদর, মিঠাপুকুর ও তারাগঞ্জে কৃষক অ্যাপসের মাধ্যমে লটারি করে ধান ক্রয় করা হবে। এবার রংপুর জেলায় ২৭ টাকা কেজি দরে ১৭ হাজার ৪০৩ মেট্রিক টন ধান ও ৪০ টাকা কেজি দরে ২৮ হাজার মেট্রিক টন চাল ক্রয় করবে সরকার।

আমন মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হওয়ার বিষয়ে রংপুর খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য ও হয়রানির কারণে গুদামে ধান দিতে অনাগ্রহের কারণ বলে কৃষকরা দাবি করেছেন।

তবে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আমন মৌসুমে সরকার ধানের দাম নির্ধারণ করে দেয় প্রতি মণ ১০৪০ টাকা। সেই অনুযায়ী এক মণ ধানে ২৬ কেজি চাল হিসাবে প্রতি কেজি চালের দাম পড়ে ৩৬ টাকা। তবে বাজারে চালের সর্বনিম্ন দাম ছিল ৪২ টাকা। ফলে চুক্তি করেও মিলাররা চাল দেয়নি। আবার স্থানীয় বাজারে সরকার নির্ধারিত দামের তুলনায় ধান ও চালের দাম বেশি থাকায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়নি।

কাউনিয়া উপজেলার শহীদবাগ এলাকার কৃষক আশেক আলী বলেন, দালাল ছাড়া খাদ্য গুদামে ধান দিলে হয়রানির শিকার হতে হয়, তাই আগ্রহ নেই।

জেলা মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম বাবু জানান, সরকার নির্ধারণ করেছে আমনের চাল ৩৬ টাকা। সেই চাল বাজারে বিক্রি হয়েছে ৪২ টাকায়। তাই মিলাররা চাল দেননি। 

রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের বলেন, বাজারে ধান এবং চালের দাম বেশি হওয়ায় আমন মৌসুমে নির্ধারিত দামে ধান-চাল সংগ্রহ করা যায়নি। তবে চলতি বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর