বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাইল হোসাইন বলেছেন, সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রবাদ ও বর্ণবাদ মানব সমাজের সবচেয়ে বড় শত্রু। এ মানবতার শত্রুদের প্রতিহত করতে হবে। এজন্য দেশ, অঞ্চল ও বিশ্বের অসাম্প্রদায়িক মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে মানুষ ও মানবতার দুষমনদের বিরুদ্ধে। যারা মন্দিরে কোরআন অবমাননা করেছেন, হিন্দুদের পূজা মণ্ডপে আক্রমণ করেছে, মূর্তি ভেঙেছে এদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সব সম্প্রদায়ের ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের সঙ্গে কুমিল্লায় মন্দির সংলগ্ন ওয়ার্ডের জনৈক বিএনপি’র কাউন্সিলরের হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের অংশবিশেষ ফাঁস হয়েছে। এ ফোনালাপ যদি সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে দেশের চলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরি করার পেছনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়।
বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাইল হোসাইন বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা জানিয়ে এসব কথা বলেন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দু-মুসলিম উভয়পক্ষ থেকেই প্রতিবাদ সমাবেশ করা হচ্ছে যা দেশের সার্বিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। সার্বিক পরিস্থিতিকে বিবেচনায় রেখে মাওলানা মোহাম্মদ ইসমাইল হোসাইনের কিছু প্রস্তাবনা দেশকে আবার স্থিতিশীল করে তুলতে পারে।
১. অনতিবিলম্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী ও এরসঙ্গে জড়িত বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী এবং তাদের দোসরদের গ্রেফতারের আওতায় আনতে হবে।
২. মসজিদ ,মন্দির ,পূজা মণ্ডপ, ঈদগাহ এরূপ ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৩. কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে কোন পক্ষের, যে কোন প্রকার প্রতিক্রিয়া বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিতে হবে।
৪. ফেসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াত চক্র যে গুজব ছড়াচ্ছে তাদের প্রত্যেককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় এনে যথাযোগ্য শাস্তি প্রদান করতে হবে।
৫. বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী কোন সম্প্রদায় অপর সম্প্রদায়ের ধর্ম এবং ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হানলে দল-মত নির্বিশেষে তাকে আইনের আওতায় আনা লাগবে।
৬. দেশের জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে তারা যেন দেশের বাইরে থেকে করা ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পারা না দেয়। বিশেষ করে বাংলাদেশে থেকে, এই দেশের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে, যে সকল বিএনপি-জামায়াত ও রাজাকারের বংশধরেরা লন্ডন থেকে নির্দেশনা পেয়ে রাজনীতি করে এবং দেশের মানুষের মধ্যে জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি পালন করে তাদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
৭. মসজিদে মন্দিরে এবং সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে ধর্মীয় গুরু এবং ইমাম সাহেবদের দাঁড়া ,ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্ব, ফজিলত এবং অপর ধর্মের অনুসারীদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মহাসচিব আল্লামা হযরত মাওলানা শাহাদাত হোসাইন, যুগ্ম মহাসচিব কাজী মাওলানা শাহ ওমর ফারুক, কাজী মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, মাওলানা মুফতী আব্দুল্লাহ হাফেজ মাওলানা আব্দুল আজিজ, হাফেজ ক্বারী মাওলানা আব্দুল মান্নান, মাওলানা তাহেরুল ইসলাম প্রমুখ
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত