বরিশালের গৌরনদী উপজেলার এক মাদ্রাসা শিক্ষককে অবরুদ্ধ রাখা এবং এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই মাদ্রাসার কেতাব বিভাগের ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় ১০ জন হাফেজ আহত হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত উপজেলার বার্থী উলূমে দীনিয়া কওমী মাদ্রাসায় এবং বার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মাদ্রাসা ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কেতাব বিভাগের ক্লাস ১৫ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
মাদ্রাসার মুহতামিম আমিনুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, মাদ্রাসার নুরানী বিভাগের শিক্ষক মানিক বেপারী প্রায় সময় ব্যঙ্গ করে কেতাব বিভাগের ছাত্রদের ডাকেন। ব্যঙ্গ করে ডাকতে নিষেধ করলে মানিক বেপারী ক্ষিপ্ত হয়ে সম্প্রতি কেতাব বিভাগের ছাত্র মো. শাহ্জালাল ও মো. মাহামুদকে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনার বিচার দিতে সহপাঠীরা সোমবার সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি হাফেজ আমিনুল ইসলামের কাছে যায়। বিচার দেওয়ার কারণে শিক্ষক মানিক বেপারী ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে ক্লাস রুমে ঢুকে কেতাব বিভাগের ছাত্র মো. রফিকুল ইসলাম ও মাহামুদ হোসেনকে পিটিয়ে আহত করে।
এতে কেতাব বিভাগের ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে শিক্ষক মানিককে ধাওয়া করে। এসময় শিক্ষক মানিক দৌড়ে মাদ্রাসার মুহতামিমের কক্ষে আশ্রয় নিলে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা তাকে আধাঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এর কিছুক্ষণ পর কেতাব বিভাগের ছাত্ররা বিচার দিতে শিক্ষক মানিকের মামা বার্থী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্জাহান প্যাদার বাড়িতে যায়। খবর পেয়ে মানিক লোকজন নিয়ে হাতুড়ি, ব্যালচা, লাঠিসোটা সহকারে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় ১০ হাফেজ কমবেশি আহত। আহত জাহিদুলকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেতাব বিভাগের ছাত্র হাফেজ মো. সোয়াইব বাদী হয়ে সোমবার রাতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
তবে অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে মানিক বেপারী সাংবাদিকদের বলেন, কেতাব বিভাগের ২ ছাত্র বেয়াদবী করার কারণে তাদের বকাঝকা দেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কতিপয় ছাত্র কুৎসা রটাচ্ছে।
মাদ্রাসার মুহ্তামিম মুফ্তি আমিনুল ইসলাম আরেও জানান, ঘটনার পর মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহ্জাহান প্যাদা ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি কেতাব বিভাগের ক্লাস ১৫ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গৌরনদী থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই