রাজশাহীর বাঘায় ঋণের দায়ে এক শিক্ষক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সকালে অমুল্য চন্দ্র নামের ওই শিক্ষক নিজ বাড়িতে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রামেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তবে রামেক হাসপাতালে যাওয়ার পথে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, উপজেলার বাউসা বেনুপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক অমুল্য চন্দ্রের প্রথম স্ত্রী তার স্বামীর ওপর অভিমান করে প্রায় ১০ বছর আগে আত্মহত্যা করে। এরপর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এই বিয়ের পর থেকে দাম্পত্য জীবনে অনেকটায় অসুখী ছিলেন তিনি। নানা কারণে সংসার চালাতে গিয়ে প্রতিবেশী অনেকের কাছ থেকে সুদের ওপরে ব্যাংক চেক জমা দিয়ে টাকা নিয়ে বিপাকে পড়েন।
এসব টাকা নেওয়ার পর নির্দিষ্ট সময় মতো টাকা পরিশোধ করতে না পারায় দিনের-পর দিন সুদের পরিমাণ বাড়তে থাকে। ফলে প্রায় দিনই কোনো-না কোনো পাওনাদার তার বাড়িতে এসে টাকার জন্য চাপ দেন। সর্বশেষ রবিবার সকালে তার দ্বিতীয় স্ত্রী স্বামীর ওপর রাগ করে বাবার বাড়ি চলে যান। এর পরদিন সোমবার সকালে তিনি বিষপান করেন।
অমুল্য চন্দ্রের ভাতিজা বিপ্লব কুমার জানান, সোমবার সকালে চাচা বাড়ি থেকে বাইরে বের না হওয়ার একপর্যায় আমি ওই বাড়িতে প্রবেশ করি। এ সময় চাচা বিছানায় শুয়ে ছিলেন। আমি সেখানে গিয়ে দেখি, চাচার মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে এবং বিষের গন্ধ বের হচ্ছে। এ সময় সেখানে একটি বিষের বোতল পড়েছিল। আমি বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাই। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রামেক হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু পথে পুঠিয়া-আড়ানী সড়কের মধ্যে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে একজন উপ-পরিদর্শককে পাঠিয়েছি। অমুল্য চন্দ্র যে বিষপান করেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নাই। এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হবে বলে তিনি জানান।
বিডি প্রতিদিন/এমআই