বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে সরগরম বরিশাল বিএনপির রাজনীতি। কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে প্রতিদিন ধারাবাহিক সভা-সমাবেশের মাধ্যমে চাঙ্গা হচ্ছে বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে তৃণমূলেও। আগামী ৫ নভেম্বরের বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত উজ্জীবিত করার ধারাবাহিক কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
এদিকে, গণসমাবেশের দিনক্ষণ এগিয়ে এলেও এখন পর্যন্ত ভেন্যু নির্ধারণ করতে পারেনি বিএনপি। ৩টি সম্ভাব্য স্থান সামনে রেখে তৎপরতা চালাচ্ছেন তারা। ওই সমাবেশে স্মরণকালের সর্বাধিক জনসমাগম ঘটানোর প্রত্যাশা নেতাদের।
নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন স্থানে গুলিতে নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদসহ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এই ধারাবাহিকতায় আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে বিভাগীয় গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে তারা।
সমাবেশ সফল করতে বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত প্রস্তুতি সভা হচ্ছে। গত ৯ অক্টোবর নগরীর একটি হোটেলে বিভাগের ৭ জেলা ইউনিট ও মহানগর বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে সভা করেন দলের স্থায়ী কমিটির সসদস্য বেগম সেলিমা রহমান। ওই সভায় ৫ নভেম্বরের গনসমাবেশ সর্বাত্মক সফল করার আহ্বান জানানো হয়।
এরপর বিএনপি মহানগর এবং বিভিন্ন জেলা ইউনিট ধারাবাহিকত প্রস্তুতি সভা করে। পরে তাদের অধীনস্থ উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে পর্যন্ত ধারাবাহিক সভা শুরু করে।
গত বুধবার বরিশাল মহানগর এবং উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবদলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন কেন্দ্রীয় যুবদল নেতারা। বৃহস্পতিবার তারা দক্ষিণের অন্যান্য জেলা কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, কৃষকদল, শ্রমিক দল, মহিলা দলসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আগামী কয়েকদিন ধারাবাহিক সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
এ সপ্তাহের শুরুতে বরিশাল আসছেন বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও ড্যাব সভাপতি ডা. জাহিদ হোসেন। তার উপস্থিতিতে বিভিন্ন ইউনিট কমিটির প্রস্তুতি সভা আহ্বান করা হয়েছে।
জোরে সোরে সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু হলেও কোথায় সমাবেশ হবে এখনও তা চূড়ান্ত করেনি দলটির নেতারা।
এ বিষয়ে মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির বলেন, বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে গণমানুষের সমাবেশ। গণমানুষের অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এতে ব্যাপক মানুষের সমাগম আশা করছেন তারা। এ কারণে বেলস পার্কে (বঙ্গবন্ধু উদ্যান) সমাবেশের চিন্তা-ভাবনা করছেন। বেলস পার্ক মাঠ উপযুক্ত না থাকলে জিলা স্কুল মাঠ এবং সেখানেও না হলে সিটি কর্পোরেশনের সামনে ফজলুল হক এভিনিউতে গণসমাবেশ করবেন। এ লক্ষ্যে প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে আশা করেন তিনি।
বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বরিশাল বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান জানান, বরিশালে বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, বেগম সেলিমা রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা গণসমাবেশে অতিথি থাকবেন। সমাবেশ সফল করতে বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত প্রস্তুতি সভা শুরু হয়েছে। ওই সব সভায় দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে বিভাগীয় সমাবেশে সম্পৃক্ত করতে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। গনমানুষের স্বার্থে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে। ‘দেশ বাঁচাও- মানুষ বাঁচাও’ স্লোগান নিয়ে বরিশালে এবার স্মরণকালের সর্ববৃহৎ বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে বলে তারা প্রত্যাশা করছেন।
বিএনপি’র বিভাগীয় গণসমাবেশের বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, তারা এখন পর্যন্ত পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেনি। কোথায় সমাবেশ করবে পুলিশকে জানায়নি। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা তারা (বিএনপি) নরমাল থাকলে পুলিশও নরমাল থাকবে। কোন বিশৃঙ্খলা করলে কিংবা জনগণের জানমাল ঝুঁকিতে ফেললে আইনগতভাবে দমন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত