বেতন বৃদ্ধির দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) পরিচ্ছন্নকর্মীরা নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন। বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে রাত ৭ টায় বৈঠকের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।
জানা যায়, নগর ভবন ঘেরাও করলে সিটি করপোরেশনের ভেতরে থাকা বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এদিন সিটি করপোরেশনের মাসিক সভা ছিল। ফলে সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ভেতর আটকা পড়েন।
বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা দফায় দফায় পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সঙ্গে কথা বললেও তারা নগর ভবন থেকে ছাড়ছিলেন না। একপর্যায়ে স্থানীয় যুবদল নেতা কেএম মাজহারুল ইসলাম জোসেফ এসে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের নিয়ে প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের গাড়ি ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন। এরপর জোসেফের কথা শুনে তারা গাড়িগুলো ছেড়ে দেন।
এরপর পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মধ্য থেকে ১০ জন প্রতিনিধি গিয়ে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক এ এইচ এম কামরুজ্জামানের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রায় এক ঘণ্টা চলে এই বৈঠক।
একপর্যায়ে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের ২ হাজার ৫০০ টাকা করে বেতন বাড়ালে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং পরিচ্ছন্ন কর্মীরা নগর ভবন ছেড়ে দেন।
আন্দোলনে অংশ নেয়া পরিচ্ছন্নকর্মী সোহেল লাল বলেন, 'আমাদের অন্তত ১ হাজার ২৫০ জন পরিচ্ছন্নকর্মী রয়েছে। সরকার থেকে আমাদের বেতন ১৭ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও আমাদের ৯ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয়। যা দ্বারা আমরা আমাদের সংসার নিয়ে চলতে পারি না। আমরা আমাদের ন্যায্য বেতন চাই। আমাদের বেতন ১৭ হাজার ৫০০ টাকা করতে হবে।'
শঞ্জু নামের আরেক পরিচ্ছন্নকর্মী বলেন, 'আমরা যে বেতন পাই, তা দিয়ে কীভাবে আমাদের পরিবার চালাবো? তাই যেকোনো মূল্যেই আমাদের বেতন বাড়াতে হবে। আমরা দিন-রাত রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করি। অথচ দিনের পর দিন আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।'
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, পরিচ্ছন্নকর্মীরা তাদের বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করেছিল। পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বেতন বাড়ানো হয়েছে। তারা নগর ভবন থেকে চলে গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমএস