সিলেটের কুলাউড়া স্টেশনে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক হেনস্থার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে সংবাদ সম্মেলন করে গনযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা হেনস্থাকারী ট্রেনের টিটিই মোশারফ আলীকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি ও বিচারের দাবি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোসাহিদ আনসারি বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক মো. ইমরান হোসেনের নেতৃত্বে সিলেটে শিক্ষা সফরে যায়। সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য জয়ন্তিকা এক্সপেক্সের টেনে উঠে।
ট্রেনে উঠার কিছুক্ষণ পর অন্য বগির দায়িত্বপ্রাপ্ত এক টিটিই নিয়ম বহির্ভুতভাবে ১০০ টাকা করে মোট ১৭০০ টাকা দাবি করেন। নিয়ম বহির্ভূতভাবে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা দিতে রাজি হননি স্যার।
পরে টিকেট পরীক্ষক (টিটিই) মোশারফ আলী বলেন, আপনারা টিকিট কাটেননি। আপনাদের কাছে আমার লোক ১০০ টাকা করে চেয়েছে, সেটাও দেননি। এখন আপনাদের সবাইকে টিকেট ভাড়াসহ জরিমানা দিতে হবে।
স্যার বলেন, আমরা টিকিট ছাড়া তাকে অবৈধভাবে কেন টাকা দেব? তখন টিটিই অনুমতি ছাড়া তার আইফোন বের করে ভিডিও ধারণ করতে শুরু করেন এবং বলতে থাকেন এই যে দেখতে পাচ্ছেন এরা ট্রেনে টিকেট ছাড়া উঠেছে, জরিমানাও দিচ্ছে না। স্যার তখন নিজের পরিচয়পত্র দেন এবং তাকে অনুমতি ছাড়া এভাবে হয়রানিমূলকভাবে ভিডিও ধারণ না করার অনুরোধ জানান।
কিন্তু টিটিই মোশাররফ আলী স্যারের কার্ড নিচে ছুড়ে ফেলে দেন এবং রাগান্বিত হন। টিটিইর তার নির্ধারিত পোশাক পরিধান না করায় স্যার তার পরিচয় জানতে চান কিন্তু তিনি তার পরিচয়পত্র না দিয়ে উগ্র আচরণ করতে শুরু করেন। স্যারের সাথে এই ঘটনা দেখে আমরা সামনে এগিয়ে গেলে আমাদের সাথেও উল্টা-পাল্টা কথা বলেছেন।
এই ঘটনা দেখে রেলওয়ে পুলিশ ও ট্রেনে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তারা টিটিই মোশাররফকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যান। পরে তার পক্ষ থেকে স্যার ও আমাদের সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছে।
শিক্ষার্থী জানান, টিটিই মোশাররফে বাড়ি কুলাউড়া। ট্রেন কুলাউড়া স্টেশনে থামলে টিটিই স্থানীয় কিছু লোকজন, সাংবাদিক এবং স্টেশন মাস্টারকে নিয়ে হাজির হয়। তারা ট্রেন আটকে রাখেন সকলের সাথে খারাপ ব্যবহার করে ও বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়।
স্টেশন মাস্টারসহ উপস্থিত সকলে বিষয়টি বুঝতে পেরে টিটিই মোশাররফ আলীর হয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন।
শিক্ষার্থী জানায়, গুটিকয়েক গণমাধ্যমের অনলাইন ভার্সনে স্যার ও শিক্ষার্থীদেরকে জড়িয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করেছে। যাতে সহকারী অধ্যাপক মো. ইমরান হোসেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ১৬ জন শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবে চরম হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ