রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় এক রাতে চারজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার দিবাগত রাতে খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ী ও বাড্ডা থানা এলাকায় ঘটনাগুলো ঘটে। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
জানা গেছে, খিলগাঁওয়ে সামিয়া আক্তার (১৪) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট উপজেলার চুনাখোলা কবির শিকদারের মেয়ে।
সোমবার রাতে খিলগাঁও উত্তর গোড়ান নবীনবাগ বাসায় সবার অগোচরে ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দেয় সামিয়া। পরে পরিবারের লোকজন দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস মাহমুদ ওই হাসপাতাল থেকে সামিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠান। তবে কী কারণে সে গলায় ফাঁস লাগিয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে তা জানতে পারেননি তিনি।
এদিকে ওই রাতে খিলগাঁও রসুলবাগ বাসায় শিহাবুল ইসলাম (২৪) নামে আরেক শিক্ষার্থী দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সাথে রশি পেচিয়ে গলায় ফাঁস দেন। পরে পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সোমবার দিবাগত রাত পোনে দুইটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক।
মৃতের বড় বোন উম্মে সাইমা জানান, শিহাবুল আফতাবনগরের ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ট্রিপল-ই’র শিক্ষার্থী ছিলেন।
সেমিস্টার পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল না হওয়ার আশঙ্কায় তিনি হতাশায় ছিলেন। হয়তো ওই হতাশা থেকে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। এছাড়া আর অন্য কোনও কারণ জানা নেই বলে মনে করছেন স্বজনরা।
শিহাবুল সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের আবু সাঈদ সরকারের ছেলে।
অন্যদিকে একই দিন রাতে যাত্রাবাড়ীর কাজলা ভাঙা প্রেস মাতবর গলি এলাকায় প্রিয়ন্তী সরকার (১৪) নামে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বাসায় দরজা বন্ধ করে ফাঁস লাগিয়ে মারা যায়।
পরে পরিবারের লোকজন ডাকাডাকি করে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে তাকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে। এরপর রাত সোয়া একটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সত্যতা নিশ্চিত করে যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পড়াশোনার জন্য শাসন করায় অভিমানে সে আত্মহত্যা করেছে। তার বাবার নাম পরিতোষ সরকার।
এছাড়া সোমবার দিবাগত রাতে বাড্ডা থানা এলাকায় স্বামীর সঙ্গে অভিমানে বিথি আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূ ফাঁস লাগিয়ে মারা গেছেন।
তিনি নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার উত্তর লালপুর গ্রামের সাইদুর রহমানের মেয়ে।
মৃতার স্বামী আসাদ মিয়া জানিয়েছেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তার সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে আমি বাইরে চলে যাই। ফিরে এসে দেখি দরজা বন্ধ, ডাকাডাকি করে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে রাত সোয়া দেড়টায় ঢামেক হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক।
বিডি প্রতিদিন/একেএ