বৃহস্পতিবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

রেললাইন ঢেকে গেছে দখলে

অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নামমাত্র বরাদ্দ, আছে লোকবল সংকটও

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রাজশাহী নগরীর ভিতর দিয়ে চলে যাওয়া রেললাইল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বসতি। এমনিতেই অনেক লেভেল ক্রসিংয়ের  গেট নেই, তার ওপর নগরীর ভিতর দিয়ে যাওয়া রেললাইনের ধার ঘেঁষে গড়ে ওঠা বসতি, দোকানপাট ও খুপড়িঘরের কারণে অন্তত ১০ কিলোমিটার এলাকা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। হামেশাই রেললাইনে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন মানুষ। পশ্চিম রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, এক একর জমিতে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে চার-পাঁচ লাখ টাকা প্রয়োজন। সেখানে ৫০ হাজার একর জমিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনায় বছরে বরাদ্দ মাত্র ৮ লাখ টাকা! এই টাকা দিয়ে অভিযান পরিচালনা করা কঠিন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর রেললাইনের দুই পাশের অনেক দোকানপাট রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে করা হলেও জমি দখল করে নির্মিত হয়েছে বসতবাড়ি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, পর্যাপ্ত তহবিল না থাকায় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না। নগরীর বহরমপুর এলাকায় রেললাইনের ধারে বাড়ি করে আছেন আনোয়ারা বেগম (৫০)। ঘরবাড়ির মধ্য দিয়ে কখন তার বাড়ির কাছে ট্রেন চলে আসে বোঝা যায় না। তার বাড়ির পাশে শিশুরা রেললাইনের ওপর বসে খেলায় মত্ত থাকে। একটু নজর এড়ালেই আশঙ্কা থেকে যায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার।

আনোয়ারা বেগম বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে এখানে বাড়ি করে আছেন। এখানেই বড় হয়েছেন। তাদের বাচ্চারা কখনো ট্রেনে কাটা পড়ে না। ট্রেন এলে শিশুরা ঠিকই বুঝতে পারে। বাইরের লোকজন যারা এই এলাকায় নতুন আসেন, তারাই বুঝতে পারেন না। আর তারাই ট্রেনে কাটা পড়েন। একই এলাকার বাসিন্দা মনিরা বেগম (২৫) বলেন, তিনিও রেললাইনের পাশেই বসতি গড়ে বসবাস করেন। তার স্বামী রিকশা চালান। রেলের জমিতেই বাড়ি করে আছেন তারা। যাওয়ার কোনো জায়গা নেই তাদের। তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে রেলের লোকজন বাড়িঘর ভেঙে দেন। আবার তারা আসেন, ঘর তোলেন। জায়গা কারও নিজের নয়। কিন্তু কেউ ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় অন্য কারও কাছে ঘরবাড়ি বিক্রি করে যান। নতুন যিনি আসেন, তিনি শুধু ঘরের দামটুকুু দেন। রাজশাহী নগরীর সিটি বাইপাস রেলক্রসিংয়ের পশ্চিম পাশে ঠিক রেললাইন ঘেঁষে একটি খড়ির দোকান আছে। এই দোকানের কারণে পশ্চিম দিক থেকে কোনো ট্রেন এলে ঠিক লাইনের ওপরে না উঠলে দেখার উপায় নেই। এখানেই কয়েক বছর আগে ছোট শিশুকে মোটরসাইকেলের পেছনে বসিয়ে লাইনের ওপর উঠে গিয়েছিলেন বাবা। তিনি আর গাড়ি ঘোরাতে পারেননি। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। শিশুটি পেছন থেকে নেমে যাওয়ায় বেঁচে যায়।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর