জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্বের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেছেন, মশা দমনের জন্য ঢাকায় যে কীটনাশক ব্যবহার বা স্প্রে করা হয়, তাতে শুধু কিউলেক্স মশা মরে, এডিস নয়। সূত্র : বিবিসি।
অধ্যাপক কবিরুল বলেন, ‘ঢাকায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য আসলে কোনো কার্যক্রমই নেই, যে কারণে ডেঙ্গু নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তিনি জানান, ‘ঢাকা শহরে মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে কার্যক্রম নেওয়া হয়, সেটা শুধু কীটনাশক দিয়ে মশা দমন, যার মাধ্যমে আসলে কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণ হয়। ড্রেন, ডোবা, নালা বা রাস্তার আশপাশে যে কীটনাশক ¯েপ্র করা হয়, সেটা হচ্ছে কিউলেক্স মশার আবাসস্থল। কিন্তু এডিস মশার আবাসস্থল হচ্ছে মানুষের বাড়ি, বাড়ির চারপাশে বিভিন্ন পাত্রে জমে থাকা পানি।’
অধ্যাপক বাশার উল্লেখ করেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কর্মী দরকার এবং বিশেষ জায়গায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার, সেটা সিটি করপোরেশনগুলো আসলে করেনি। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের আসলে কোনো প্রশিক্ষিত দলই নেই, যারা এডিস মশার লার্ভা বা পূর্ণাঙ্গ এডিস মশা চিনতে পারেন বা কোথায় এগুলো জন্মায়- সেটা চিনতে পারেন।কীটতত্ত্বের অধ্যাপক কবিরুল বাশার আরও জানান, ২০০০ সালের দিকে যখন বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তখন এডিস মশা সার্ভেইল্যান্স নামের একটি প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছিল। সেই প্রজেক্ট এক বছর চলে। এরপর সিটি করপোরেশনে কিছুটা এডিস মশা নিয়ন্ত্রিত হয়েছিল। তখন ১৪ জনের একটি টিম ছিল, যারা প্রতিদিন বিভিন্ন ওয়ার্ডে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা করত যে, এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব কোন জায়গায় কেমন আছে এবং সেগুলো গবেষণাগারে নিয়ে এসে পরীক্ষা করে দেখা হতো। সে অনুযায়ী সিটি করপোরেশনকে একটি তথ্য দেওয়া হতো। সেই তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে করপোরেশন তাদের কার্যক্রম চালাত। কিন্তু এক বছর পরই সেই প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়।