শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

তৃণমূলের সমর্থন পেতে দৌড়ঝাঁপ নেতাদের

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

তৃণমূলের সমর্থন পেতে দৌড়ঝাঁপ নেতাদের

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১২ ডিসেম্বর। এই সম্মেলনকে সামনে রেখে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে নেতাদের। তৃণমূলের নেতাদের পক্ষে টানতে চলছে নানা তৎপরতা। তবে কাউন্সিলর হতে পারছেন না ২০০৮ সালের পর দলে যোগ দেওয়া ব্যক্তিরা। অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা পেলে আজ তাদের বাদ দিয়েই কাউন্সিলরের তালিকা অনুমোদন করা হবে জেলা কমিটির সভায়। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সমন্বয়ক কেন্দ্রীয় নেতা এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, অনুপ্রবেশকারীদের চাপে ত্যাগী নেতারা মূল্যায়ন পায় না। এ কারণে তাদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। একটি তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা পেলে সেভাবেই কাউন্সিলরের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, গোদাগাড়ীতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে সুবিধাভোগীদের মধ্যে আছেন কাঁকনহাট পৌর মেয়র আবদুল মজিদ। প্রয়াত বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ঘনিষ্ঠ থেকে ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন আবদুল মজিদ। তিনি এখন জেলা কমিটির সদস্য ও কাঁকনহাট পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি। গোদাগাড়ী উপজেলা যুবদলের সভাপতি রবিউল আলম এখন গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মফিদুল ইসলাম বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। তিনি পবা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তার সঙ্গে ওই ইউপির সদস্য ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, মহিলা সদস্য রেশমা বেগম এবং রাশেদা বেগম আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

চারঘাট উপজেলার চারঘাট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাবিল উদ্দিন, শলুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি তৌফিক ইসলাম, চারঘাট পৌর বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি শফিউর রহমান, যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুল কাদের ও ভায়ালক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা আবদুল মান্নান আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।

পুঠিয়া উপজেলার পুঠিয়া পৌর বিএনপির সভাপতি আলী হোসেন, পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ বিশ্বাস, পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান, জিউপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল ইসলাম আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এদের মধ্যে আতিকুর রহমান যোগ দিয়েই পৌরসভায় চাকরি বাগিয়ে নিয়েছেন। তানোর উপজেলার কলমা ইউপির ওয়ার্ড পর্যায়ের বিএনপি নেতা আব্বাস উদ্দিন, আতাউর রহমান ও রেজাউল করিম যোগদান করেন। বাগমারায় এক সময়ের জেএমবি নেতা আবদুস সালাম এখন উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক।

গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নও পেয়েছিলেন তিনি। পরে গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর সালামের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, জেলায় সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশ ঘটেছে রাজশাহীর তানোর-গোদাগাড়ীতে। এখানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির হাত ধরে এসব নেতা-কর্মীর অনুপ্রবেশ ঘটেছে। সবমিলিয়ে গত ১০-১২ বছরে তিন হাজারেরও বেশি নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগে যোগদান করে এখন দাপট দেখাচ্ছে। কেউ কেউ জনপ্রতিনিধিও হয়েছেন। তাদের কাছে ২৫০ জনের একটি তালিকা আছে। সেই তালিকা অনুযায়ী কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর